সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায় এমন প্রযুক্তি চীনা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে হস্তান্তরের অভিযোগে তিন জার্মান নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজের চীন সফরের এক সপ্তাহ পরেই এই ঘটনা ঘটলো। এর আগে, গত সপ্তাহে রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দুই রুশ-জার্মান নাগরিককে গ্রেফতার করে জার্মানি।
জার্মানি জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের দুজন হলেন হারউইগ এফ. ও ইনা এফ.। এই দম্পতি ডুসেলডর্ফে একটি কোম্পানি চালান। তারা তাদের কোম্পানির মাধ্যমে একটি জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি করেছেন। গ্রেফতার অপরজনের নাম টমাস আর.। তাকে চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের (এমএসএস) একজন কর্মচারীর এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জার্মান কর্মকর্তারা।
এক বিবৃতিতে জার্মান কর্মকর্তারা বলেন, হারউইগ এফ. এবং ইনা এফ. দম্পতির সঙ্গে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়টির চুক্তির এক অংশে একটি গবেষণার সম্পর্কেও বলা হয়েছে। চীনা চুক্তিভিত্তিক অংশীদারের জন্য মেশিনের যন্ত্রাংশের ওপর সেই গবেষণায় যুদ্ধজাহাজের মতো শক্তিশালী সামুদ্রিক ইঞ্জিন পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চীনের চুক্তিভিত্তিক সেই অংশীদার হচ্ছে এমএসএসের একজন কর্মচারী, যার কাছ থেকেই নির্দেশনা পেয়েছিলেন টমাস আর.। জার্মান কর্মকর্তারা আরও বলেন, সন্দেহভাজনরা এমএসএসের হয়ে জার্মানি থেকে একটি বিশেষ লেজারও কিনেছিলেন ও সেই টাকা পরিশোধও করেছে এমএসএস। এরপর অনুমোদন ছাড়াই লেজারটি চীনে রপ্তানি করেছিলেন তারা। তবে লেজারটি কীসের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি বার্লিন।
চীনের সঙ্গে এক প্রকার অম্ল-মধুর সম্পর্ক রয়েছে জার্মানির। বার্লিন বেইজিংকে অংশীদার ও প্রতিদ্বন্দ্বী উভয়ই মনে করে। গত বছর জার্মান সরকার একটি কৌশলপত্র পেশ করেছিল, যেখানে চীনকে একই সঙ্গে প্রধান বাণিজ্য অংশীদার ও পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত সপ্তাহে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে মস্কোর প্রতি বেইজিংয়ের সমর্থন, মেধা সম্পত্তি চুরি ও ন্যায্য বাজারে প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে চীন সফরে গিয়েছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর। রাশিয়ায় চীনের দ্বৈত ব্যবহার উপযোগী পণ্য রপ্তানি করার বিষয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে জার্মানি। কারণ, ওইসব পণ্য যুদ্ধক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়।