পানির উপরে ফুটে রয়েছে সাদা ধবধবে বরফের পদ্ম। দেখলে আপনার চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। ভাবছেন তো? পদ্ম, তাও আবার বরফের কী করে? আসলে এই ফুলগুলোকে বলা হয় ফ্রস্ট ফ্লাওয়ার, আইস ফ্লাওয়ার বা সি আইস। এই ফুল কিন্তু সব জায়গায় জন্মায় না। অর্থাৎ আপনি এটিকে বিরল মনেই ধরতে পারেন।
সাধারণত এই ফুলের ব্যাস ৩ থেকে ৪ সেন্টিমিটার হয়। এগুলি পানির উপরেই হয়। কখনও কখনও ঠান্ডা সমুদ্র উপকূল কাছাকাছি ফুটতে দেখবেন এদের। এগুলো আসলে বরফের পাতলা স্তর, যেগুলো খুব কম তাপমাত্রায় তৈরি হয়। বিশেষ করে আর্কটিক মহাসাগর এবং এর আশেপাশের এলাকায়। তুষারপাতের পর ফুলের মতো রূপ নেয় নিজে থেকেই। কিন্তু এমনটা কীভাবে সম্ভব?
বরফের পাতলা স্তর বাতাসের চাপে ঘুরতে থাকে এবং ফুলের আকার ধারণ করে, তখন তাকে হিম ফুল বলা হয়। এগুলো সহজে যে কোনও জায়গায় দেখা যায় না। আসলে যখন তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যায়, তখন ভূমি হিমায়িত হয় না। কিন্তু এর উপরের বায়ু হিমায়িত হয়।
ফলে পানি জমে যায়। আর তার উপরে বাষ্প বা কুয়াশা জমতে শুরু করে। এর ফলে বরফের লম্বা-চওড়া পাতলা স্তর জমতে শুরু করে উপর উপর। তারা ঠান্ডা বাতাসে জমে যায়। উপর থেকে আসা বাষ্প, আর্দ্রতা বা কুয়াশা নতুন পাতা তৈরি করতে থাকে। আর তা উপরে জমতে থাকে। ফলে দেখতে ফুলের মতোই লাগে।
তাপমাত্রা মাইনাস 8 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলেই এগুলো তৈরি হয়। এই বরফ পদ্ম বা বরফের ফুল খুব ঠান্ডা জায়গায় শুধুমাত্র সকালে ও সন্ধ্যায় দেখা যায়। দিনের বেলা তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে এগুলি গলে যায়। এমনকী খুব দ্রুত অদৃশ্য হয়ে যায়।
রাত হলেই আবার দেখা যায়। এদের বিশেষ করে ছায়াময় এলাকায় দেখা যায়। সমুদ্রের পানিতে হয় কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে সালফেট থাকে। মাইনাস ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এই ফুলগুলিকে আরও বেশি দেখা যায়।