পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার চার শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঘুস দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার (৭ আগস্ট) কলকাতা আলিপুর নগর দায়রা বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি অর্পণ চট্টোপাধ্যায় এই চার প্রাথমিক শিক্ষকে গ্ৰেফতারের নির্দেশ দেন।
চারজনই মুর্শিদাবাদের জেলার বাসিন্দা। তারা হলেন সাইগর হোসেন, জহিরউদ্দিন শেখ, সৌগত মন্ডল, ও সিমর হোসেন। গ্রেফতারের আগে তারা প্রত্যেকেই চাকরি করছিলেন বলে জানা গেছে।
তাদের বিরুদ্ধে ঘুস দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদরে চাকরি কেনার অভিযোগ উঠেছিল। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই চারজনকেই জেরা করে সিবিআই। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সাক্ষী হিসেবে সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম রাখা হয়েছিল তাদের।
এদিন বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় সিবিআইয়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ঘুস দিয়ে চাকরি কেনার স্পষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা অভিযুক্ত নয়।
বিচারপতির এই প্রশ্নের জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তাদের কাছ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা তথ্য পাওয়ার জন্যই সাক্ষী হিসেবে দেখানো হয়েছিল। কীভাবে ও কাদের তারা রুপি দিয়েছিলেন, দুর্নীতির জাল কতদূর ও কীভাবে বিস্তার লাভ করেছিল সেই সব তথ্য জানার জন্যই এই শিক্ষকদের অভিযুক্ত নয় বরং মামলার সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সিবিআই এর আইনজীবী।
এই কথা শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি অর্পণ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই অযোগ্য শিক্ষকরা নিজেরাই চাকরি কেনার জন্য অর্থ দিয়েছেন। তাই বাকিদের সঙ্গে তারা সমান অপরাধে অপরাধী। ফলে সাক্ষী নয়, চার শিক্ষকে অভিযুক্ত বলে দাবি করে তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন কলকাতার আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারপতি অর্পণ চট্টোপাধ্যায়।
সোমবার এই চারজনই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তারা জামিনের আবেদনও করেছিলেন তবে সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি। আপাতত এই ৪ জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছে তাদের।
পশ্চিমবঙ্গে প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এর আগেও একাধিক গ্ৰেফতারির ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনো জেলে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের মতো প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীরা। এছারাও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতা ও বিধায়ক জেলা রয়েছে।
শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় অভিযোগে অভিযুক্ত এই প্রথম কোনো শিক্ষককে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন আদালত।