শক্তিশালী বিস্ফোরণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্রিমিয়ান সেতু। দুই ভাগে বিভক্ত সেতুর সড়ক অংশের দুটি খণ্ড বিস্ফোরণে ধসে পড়েছে। আগুন লেগেছে রেল অংশে থাকা তেলবাহী ট্যাংকারে। রাশিয়া বলছে, একটি গাড়িবোমা ব্যবহার করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এর জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি। খবর এপির।
রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার মধ্যে স্থলসংযোগের একমাত্র মাধ্যম এই ক্রিমিয়ান সেতু বা কের্চ প্রণালী সেতু। ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ আধিপত্যের একটি প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। দক্ষিণে রাশিয়ার সামরিক অভিযান টিকিয়ে রাখার চাবিকাঠিও এটি। এ অবস্থায় ক্রিমিয়ান সেতু অকেজো হয়ে গেলে দ্বীপটিতে পণ্য বা সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
আগ্রাসনের শুরুর দিকে ক্রিমিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাগুলো দখল করেছিল রাশিয়া এবং আজভ সাগর বরাবর একটি স্থল করিডোর তৈরি করেছিল। এটি পুনরুদ্ধার করতে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন।
ক্রিমিয়ান সেতুটি সড়ক ও রেল দুটি অংশে বিভক্ত। সড়ক অংশে আবার রয়েছে দুটি ভাগ। মূলত পাশাপাশি তিনটি সেতু মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ক্রিমিয়ান সেতু।
রাশিয়ার জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি (এনএসি) জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ও আগুনে সড়ক সেতুর একটি অংশের দুটি খণ্ড ভেঙে গেছে অন্য সড়কটি অক্ষত রয়েছে।
এক বিবৃতিতে এনএসি বলেছে, আজ মস্কো সময় ভোর ৬টা ৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিট) তামান উপদ্বীপের পাশে ক্রিমিয়ান সেতুর সড়ক অংশে একটি পণ্যবাহী ট্রাকে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ক্রিমিয়া দ্বীপে যাওয়ার পথে ট্রেনের সাতটি জ্বালানি ট্যাংকে আগুন ধরে যায়।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্রিমিয়ান সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিস্ফোরণের কথা জানানো হয়েছে। তিনি জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় একটি সরকারি প্যানেল তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।
কের্চ প্রণালীর ওপর নির্মিত ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ক্রিমিয়ান সেতু ইউরোপের দীর্ঘতম। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা একাধিকবার এই সেতুতে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের মে মাসে ক্রিমিয়ান সেতুতে গাড়ি চলাচলের জন্য স্প্যানের প্রথম অংশ খুলে দেয় রাশিয়া। পরের বছর চালু হয় রেল অংশটি। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে মোট ৩৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
এই বছর রুশ বাহিনী মারিউপোলসহ আজভ সাগরের উত্তর প্রান্তে আরও বেশি ইউক্রেনীয় অঞ্চল দখল করার আগপর্যন্ত এটিই ছিল ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার স্থলসংযোগের একমাত্র মাধ্যম।