গত ১ মাসে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ হাজার। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ২২ জনে উপনীত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জনই শিশু। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক ফিলিস্তিনি আটকে রয়েছেন এবং ইসরায়েলের অবরোধের মুখে খাদ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের হামলা চলতে থাকলে নিহতের এই সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। দক্ষিণ গাজার বাসিন্দা খান ইউনূস কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিনিধি হানি মাহমুদকে বলেন, ‘উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশ সরাতে পারছে না।’
এদিকে নিহতের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হলেও যুদ্ধ বিরতির কোনো সদিচ্ছা নেই ইসরায়েলের। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর পরই গাজায় হামলা শুরু হয়। আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) পর্যন্ত চলমান হামলায় আহত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪০৮ ফিলিস্তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, কয়েক ঘণ্টায় ১৮টি বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। এতে নিহত হয়েছেন ২৫২ ফিলিস্তিনি।
তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় ১১০ জনেরও বেশি লোক গত কয়েক ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেক্ট বলেন, ‘আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছি।’
এদিকে, সেন্ট্রাল জাবালিয়া ব্যাটালিয়নের কমান্ডার যোদ্ধা ইব্রাহিম বারির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাসের একজন যোদ্ধা বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে গাজাকে শিশুদের জন্য ‘কবরস্থান’ উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আবারও সেখানে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব এনেছেন। কিন্তু ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষের কেউই এই প্রস্তাবে নারাজ। হামাসের ভাষ্য, ফিলিস্তিনকে ইসরায়েলি অবরোধমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ বিরতিতে যাবে না। অন্যদিকে তেলআবিব কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, হামাসের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেন ইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি। আমরা হামাসকে নিশ্চিহ্ন করবোই।’