অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এখনই ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর করলে হামাস উপকৃত হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যখন গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে তখন মিলার এমন হুঁশিয়ারি দিলেন। বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির জন্য বার বার আহ্বান জানানো হলেও যুক্তরাষ্ট্র ব্যতিক্রম কিছু চাচ্ছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ম্যাথিউ মিলার বলেন, যুদ্ধবিরতি হামাসকে বিশ্রামের সুযোগ দেবে, পুনরায় গুছিয়ে ওঠার সুযোগ দেবে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়ার ক্ষমতা বাড়াবে।
দখলদার ইসরায়েল যখন নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে গাজা উপত্যকার অসহায় নিরস্ত্র মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে তখন চলমান পরিস্থিতিকে তেল আবিবের জন্য ‘অসহনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন মিলার।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, আপনি স্পষ্ট বুঝতে পারেন কেন এটি ইসরায়েলের জন্য একটি অসহনীয় পরিস্থিতি। এ ধরনের নৃশংস হামলার শিকার যেকোনো দেশের জন্য একটি অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি করবে; বিশেষ করে যে দেশ তার সীমান্তে অব্যাহত সন্ত্রাসী হামলার হুমকির মুখে রয়েছে।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল সোমবার বলেছিলেন, তিনি আশা করেন যে, ইইউ নেতারা মানবিক সহায়তার জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে সমর্থন করবেন।
লুক্সেমবার্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর জোসেপ বোরেল বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে মানবিক ত্রাণ তৎপরতা চালানোর সুবিধার্থে একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির ধারণা নেতারা সমর্থন করবেন। তেমন একটি যুদ্ধবিরতি বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয় খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর দশকের পর দশক ধরে চালানো অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘আল-আকসা তুফান’ অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপর থেকে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৮ দিনে গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ছয় হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২ হাজার ৫৫ জন বা ৪০ শতাংশই শিশু এবং ১ হাজার ১১৯ জন নারী।
মঙ্গলবার গাজায় চার শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ধ্বংস হয়েছে একটি মসজিদসহ বহু স্থাপনা। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে। সেখানে এক হামলায় অন্তত ৩০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে গাজার হাসপাতালগুলো।