প্রায় চার মাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও সহিংস সংঘর্ষের কারণে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে মণিপুরে। নতুন করে ইম্ফলের কৌত্রুক এলাকায় সশস্ত্র আক্রমণে এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়, আহত হন একাধিক ব্যক্তি।
অভিযোগ উঠেছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। তারা পাহাড় থেকে কৌত্রুক ও পার্শ্ববর্তী কাদাংবন্দের নিচু এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। হতাহতের পাশাপাশি বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশেই রয়েছে কুকি জনবহুল পার্বত্য জেলা কাংপোকপি। এরপর থেকেই বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুরের পরিস্থিতি।
গত সপ্তাহে কুকিরা মইরাংয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করে বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় এক বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর পাশাপাশি মণিপুরের জিরিবাম জেলায় সহিংসতায় চারজন সন্দেহভাজন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য ও এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আসাম সীমান্তবর্তী জিরিবামের মংবুং গ্রামের কাছে ওই হামলা চালানো হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জিরিবামে মেইতেই সম্প্রদাইয়ের এক প্রবীণ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়ে। ওই এলাকায় এখনো উত্তেজনা রয়েছে ও পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, রাজ্যে সাম্প্রতিক হিংসায় অত্যাধুনিক ড্রোন ও আরপিজি (রকেটচালিত বন্দুক) ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের অস্ত্র সাধারণত যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়।
সেরাম রোজেশ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমার বাড়ি মইরাংয়ে। একটা শান্ত জায়গায় এভাবে হামলা চালানো হয়েছে ভেবেই শিউরে উঠছি। ঘটনায় যার মৃত্যু হয়েছে, তিনি মেইতেইয়ের একজন প্রবীণ সদস্য। তাকে এভাবে প্রাণ দিতে হলো, বিষয়টা খুবই দুঃখের।
পুলিশ সন্দেহ করছে, ওই প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বোমা বিস্ফোরণে। আর সেটি ছোড়া হয়েছিল সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মাইরেমবাম কোইরেঙের বাড়িকে লক্ষ্য করে। গত সপ্তাহে একাধিক জায়গায় একই রকমভাবে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, পুলিশ জানিয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার লুট করার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু সেখানে মোতায়েন যৌথ বাহিনী তা প্রতিহত করতে সমর্থ হয়। হামলাকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। একদল হামলাকারী আবার পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়, যাতে দুজন পুলিশকর্মী আহত হন।