কয়েকমাস ধরে নিজের কিডনি বিক্রির চেষ্টা করছেন ইন্দোনেশীয় নাগরিক এরফিন দোই সুদান্ত। ৪৭ বছর বয়সী ব্যক্তির উদ্দেশ্য, কিডনি বিক্রি করে নির্বাচনী প্রচার করবেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় নির্বাচনে সুদান্তের মতো হাজারো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনকে ঘিরে কিডনি বিক্রি করে তহবিল সংগ্রহ করছেন সুদান্ত। তার আশা, এভাবে ২০ হাজার ডলার তহবিল সংগ্রহ করতে পারবেন তিনি।
সুদান্ত বলেন, ‘এটা কোনো অতিরঞ্জন নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই সিরিয়াস। আমার কোনো সম্পত্তি নেই। তাই তহবিল সংগ্রহের একমাত্র উপায় কিডনি বিক্রি করা।
দুই মাস ধরে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন সুদান্ত। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় এবারের প্রচারের খরচ অনেক বেশি। সুদান্তের অনুমান, প্রচারের জন্য তার ৫০ হাজার ডলার প্রয়োজন হবে। টি-শার্ট থেকে শুরু করে প্রচারের সামগ্রীর সঙ্গে ভোটারদের উপহার দিয়ে দলে ভেড়ানোর সংস্কৃতিও রয়েছে দেশটিতে।
সুদান্ত বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভঅবে ভোট কেনার পক্ষে নই। কিন্তু এটা আমাদের সমাজে গেঁথে গেছে।’ প্রত্যেক ভোটারকে ৩ থেকে ৭ ডলার দিতে হয় বলে জানান তিনি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩০০ থেকে ৭৫০ টাকার মতো।
ইন্ডিকেটর পলিটিক ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান গবেষক বুরহানউদ্দিন মুহতাদি বলেন, ইন্দোনেশিয়ার এক-তৃতীয়াংশ ভোটারকে ‘উপহার’ দিতে হয়। কখনো তা টাকা, কখনোবা আবার চাল কিংবা ভোজ্য তেল।
২০১৪ ও ২০১৯ সালের নির্বাচনে দেশজুড়ে জরিপ চালিয়ে এমন ফল পেয়েছেন বুরহানউদ্দিন। তিনি বলেন, আইনপ্রণেতার পদে দাঁড়ানো প্রার্থীরা প্রতি ভোটারদের ২০ থেকে ৫০ হাজার রুপিয়াহ দিয়ে থাকেন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪০০ টাকার বেশি। আর জাভা দ্বীপের মতো এলাকায় শুধু ভোট কিনতেই প্রার্থীদের ব্যয় করতে হয় এক হাজার কোটি রুপিয়াহ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭০ কোটি টাকারও বেশি। আবার কোথাও কোথাও একটি ভোট কেনার জন্য ১৫০ ডলার ব্যয় করতে হয় প্রার্থীদের, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৫ হাজার টাকারও বেশি
বিশ্বে টাকা দিয়ে ভোট কেনার এই সংস্কৃতিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। তাদের আগে শুধু উগান্ডা ও বেনিন। বুরহানউদ্দিন বলেন, ‘এটা যেন নতুন এক স্বাভাবিকতা‘।