ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে হিজাব নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে। এরই মধ্যে রাজ্যের কলেজ ও ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট আগামীকাল বুধবার থেকে খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ বোম্মাই।
এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সি এন অশ্বত্থ নারায়ণ, সংখ্যালঘু কল্যাণমন্ত্রী শ্রীমন্ত পাতিল ও রাজস্ব মন্ত্রী আর অশোকার সঙ্গে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বাসাভারাজ এ আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কলেজগুলোতে যেন নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এদিকে আদালতের নির্দেশ অনুসারে কর্ণাটকের সব স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। সেসব ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুলে ঢোকার আগে শিক্ষার্থীদের হিজাব খুলে ফেলতে বলা হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের অনেকেই হিজাব খুলতে রাজি হননি; তাদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমনকী কর্ণাটকের উদুপি এবং শিভামগ্গা জেলার স্কুলের দুই শিক্ষার্থী হিজাব খুলে পরীক্ষায় বসতে রাজি হননি। তাদের মধ্যে একজন ছাত্রীর অভিভাবক এনডিটিভিকে বলেছেন, হিজাব খুলে না ফেললে পুলিশের ভয় দেখিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা।
উদুপির সরকারি একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া ওই ছাত্রীর অভিভাবক আরো বলেছেন, এ ধরনের (হিজাব নিষিদ্ধ) ঘটনা আগে ঘটেনি। আমাদের সন্তানকে আলাদা ঘরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) শিক্ষকরা বাচ্চাদের ওপর চিৎকার করেছেন … তারা এর আগে এমনটা করেননি।
তিনি আরো বলেছেন, ‘শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বলেছেন- যারা হিজাব পরে আছ, বাইরে যাও; যারা হিজাব ছাড়া আছ তারা ক্লাসে বসো। ‘
তিনি আরো বলেছেন, আমাদের সন্তানরা হিজাব পরতে চায় এবং তারা শিক্ষালাভ করতে চায়। হিন্দু শিক্ষার্থীরা সিঁদুর পরে এবং খ্রিস্টানরা জঁপমালা পরে; আমাদের সন্তানরা হিজাব পরলে দোষটা কোথায়?
এদিকে ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো চলমান বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য হিজাব বিতর্ককে ব্যবহার করছে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য মামলায় আবেদনকারীদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী কর্ণাটক হাইকোর্টকে আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখার অনুরোধ করেছেন।
আয়েশা আলমাস এবং উদুপি জুনিয়র স্কুলের আরো চার ছাত্রীর পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ তাহির তার আবেদনে বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উত্তরপ্রদেশসহ পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন চলছে। রাজনৈতিক দলগুলো হিজাব ইস্যুকে ব্যবহার করছে। মেরুকরণ এবং একে অপরের বিরুদ্ধে সম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়াচ্ছে দলগুলো।
আবেদনে আরো সতর্ক করা হয়েছে যে, যেকোনো ব্যক্তির যেকোনো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড সাম্প্রদায়িক বিভাজন আরো বাড়িয়ে দেবে।