টিকা কার্যক্রম শুরুর পর থেকে যেসব দেশ করোনার টিকা দেয়া শুরু করেছে ওই দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ইসরাইল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি মানুষকে করোনা টিকা দেয়া হয়েছে। বিশ্বের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ। ইসরাইলে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১১ দশমিক ৫৫ জনকে করোনা টিকা দেয়া হয়েছে।
টিকা কার্যক্রমের তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রিটেন। দেশটিতে টিকা দেয়ার হার এক দশমিক ৪৭।
করোনার টিকা কার্যক্রমের উপর নজর রাখা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি ওয়েবসাইট এ পরিসংখ্যানটি তুলে ধরেছে। এখন পর্যন্ত যেসব টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে ওই টিকাগুলো এক সপ্তাহের বেশি সময়ের ব্যবধানে দুই ডোজ দিতে হবে।
তারা তথ্য মতে, ফ্রান্সে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৩৮ জনকে করোনা টিকা দেয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে ১৮ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেট ছিল ২০২০ সালের মধ্যে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া, কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর তারা টিকা দিতে পেরেছে প্রায় ২৮ লাখ মানুষকে।
ইসরাইল কেন এগিয়ে
ইসরাইলে টিকা দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর। দেশটিতে প্রতিদিন টিকা দেয়া হচ্ছে দেড় লাখ মানুষকে। ইসরাইলে করোনা টিকা দেয়ার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে ৬০ বছরের বেশি বয়সী, স্বাস্থ্য-কর্মী ও যারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তাদের।
মহামারি শুরু হওয়ার পর পরই ইসরাইল টিকা পাওয়া জন্য ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের সাথে সমঝোতা করে রেখে ছিল। এর পর দেশটি ধাপে ধাপে ফাইজারের টিকার চালান নিশ্চিত করে। এই টিকাটি মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, যিনি আবারো নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, তিনি আশা করেছিলেন তার দেশ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই মহামারি থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। বর্তমানে দেশটিতে তৃতীয়বারের মতো লকডাউন জারি রয়েছে।
ফ্রান্স কেন পিছিয়ে
ফ্রান্সে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে ২৭ ডিসেম্বর। ২০২০ সালের শেষ নাগাদ তারা ১৩৮ জনকে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ জার্মানিতে এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে।
মানুষকে টিকা দেয়ার পেছনে একটি বড় সমস্যা হিসেবে কাজ করেছে এর কার্যকারিতার বিষয়ে মানুষের নিরাশা।
এ বিষয়ে ১৫টি দেশে একটি জরিপ চালানো হয়। দেখা গেছে ফ্রান্সে মাত্র ৪০% মানুষ জানিয়েছে যে, তারা টিকা নিতে আগ্রহী।
কিন্তু চীনে এই হার ৮০%, ব্রিটেনে ৭৭% এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৬৯%।
কী করছে ভারত?
ভারতে করোনাভাইরাসের টিকা কর্মসূচির এক মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারত সরকারের একটি প্যানেল এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকাটি অনুমোদন করেছে এবং দেশটি এ বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ৩০ কোটি মানুষকে এই টিকা দিতে চাইছে।
অক্সফোর্ডের টিকাটি সাধারণ ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা যায়।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলছেন, টিকা দেয়ার মহড়ায় হাজার হাজার স্বাস্থ্য-কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীকে জড়িত করা হচ্ছে – যার লক্ষ্য হলো দক্ষতা তৈরি করা এবং টিকাদানের সময় যেন কোনো সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করা।
ভারতে করোনাভাইরাসে প্রায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে এক কোটিরও বেশি মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ভারত।
সূত্র : বিবিসি