ভারতের উড়িষ্যায় স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে সবে সংসার শুরু করেছিলেন মৌসুমী। গত বছরের মে মাসের ঘটনা। ভারতে তখন করোনাভাইরাস মহামারি চরমে।
ওই সময় করোনা আক্রান্ত হন মৌসুমীর স্বামী অভিষেক।
প্রথমে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অভিষেককে। তবে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা জানান, তাঁর ‘এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন’ (একমো)-র প্রয়োজন।
ব্যয়বহুল চিকিৎসা দেওয়ার মতো সামর্থ ছিল না মৌসুমীদের। তাছাড়া উড়িষ্যায় চিকিৎসাটি সহজলভ্যও ছিল না। চিকিৎসার এত টাকাও ছিল না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন মৌসুমী। তাতে যথেষ্ট সাড়াও পেতে শুরু করেন। এরপর অভিষেককে নিয়ে জুন মাসেই কলকাতায় চলে যান চিকিৎসার জন্য।
অভিষেককে বিমানে করে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ৮৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালানোর পর হেরে যান অভিষেক। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় স্বামীকে হারান মৌসুমী।
উড়িষ্যার ভদ্রকের তরুণী মৌসুমী মোহান্তির বিয়ে হয়েছিল মন্দারির বাসিন্দা অভিষেক মহাপাত্রের সঙ্গে।
মৌসুমী জানান, অভিষেকের চিকিৎসার জন্য ৪০ লাখ টাকা জমা হয়েছিল। এখনো অনেকে সাহায্য করছেন। কিন্তু যাঁর চিকিৎসার জন্য সেই টাকা, তিনিই তো নেই!
সে কারণে ওই টাকা অন্য কারও চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন মৌসুমী। তিনি বলেন, ওই সময় মানুষ যেভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, আর্থিক সহযোগিতা করেছে, লকডাউনের কারণে আর্থিক টালামাটাল অবস্থার মধ্যেও যেভাবে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন তা সত্যিই অভাবনীয়। আমি কৃতজ্ঞ সেই সকল মানুষের কাছে।
গত ১৭ জানুয়ারি বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ভদ্রকের জেলাশাসকের দপ্তরে যান মৌসুমী। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৩০ লাখ টাকা দান করেন। বাকি ১০ লাখ টাকা জেলার রেড ক্রস সোসাইটিতে দান করে দেন।