ইসরায়েল থেকে সব কূটনীতিকক প্রত্যাহার করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গাজায় ‘নির্বিচারে’ বেসামরিকদের উপর হামলা ও ‘হত্যাযজ্ঞের’ পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট উদ্বেগ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডর।
দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তা খুম্বুদজো এনতশাভেনি বলেছেন, তেল আবিবে নিযুক্ত সব কূটনীতিককে পরামর্শের জন্য প্রিটোরিয়ায় ফিরে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে, কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে ‘স্বাভাবিক’ বলে দাবি করেছেন সাউথ আফ্রিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও ইসরায়েলে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত নেই।
এক সংবাদ সম্মেলনে নালেদি প্যান্ডর বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি অঞ্চলে শিশু ও নিরপরাধ বেসামরিকদের অব্যাহত হত্যাকাণ্ডে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তাছাড়া আমরা মনে করি, সারাবিশ্ব থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার এমন উদ্বেগের ইঙ্গিত দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে কাজ করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির বর্তমান সরকার ফিলিস্তিনিদের অবর্ণনীয় নিপীড়নের ঘটনাকে ১৯৯৪ সালে অবসান ঘটা বর্ণবাদী শাসনের সময়কার দুর্দশার সঙ্গে তুলনা করেছে।
গত মাসে কায়রোতে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে অংশ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা সংঘাতে লিপ্ত উভয়পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ না করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। একই সময়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সৈন্য মোতায়েনে জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানায়।
গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে অভূতপূর্ব আক্রমণ করার পর থেকে গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক নাগরিক।
সেই সঙ্গে হামাস ২৪০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। হামাসের ওই হামলার প্রতিশোধ নিতেই গাজায় নির্বিচারে বোমাবর্ষণের পাশাপাশি স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এসব হামলা ও অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছুঁয়েছে।