কানাডা, মেক্সিকো, চীন ও ভারতের পর এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর ওপর চড়া শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউরোপের ২৭ দেশের এই জোট ঐতিহ্যগতভাবে মার্কিন মিত্র হলেও যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে এবার তাদেরকেও নিজের কঠোর নীতির কথা জানিয়ে দিলেন তিনি। খবর আলজাজিরার।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, ইউরোপকে মার্কিন তেল ও গ্যাস বিশাল পরিমাণে ক্রয় করতে হবে। অন্যথায়, ‘পুরোপুরি ট্যারিফ আরোপ হবে’।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের তেল ও গ্যাসের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক ইউরোপ। দেশটির মোট তেল রপ্তানির ৫০ শতাংশেরও বেশি যায় ইউরোপে, যা প্রতিদিন ২ মিলিয়ন ব্যারেলেরও বেশি। ২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি আমদানি বাড়ায় ইউরোপের দেশগুলো।
পরের বছর যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানির ৬৬ শতাংশই যায় ইউরোপে। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিনমাসে ইইউর এলএনজি আমদানির ৪৭ শতাংশ এবং তেল আমদানির ১৭ শতাংশ সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইতোমধ্যে ইউরোপীয় কমিশন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। একইসঙ্গে নিজেদের জ্বালানি শক্তির উৎস বৈচিত্র্যময় করা এবং রাশিয়ার তেল-গ্যাস আমদানি ধীরে ধীরে বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। তবে, বেশির ভাগ ইউরোপীয় জ্বালানি শক্তি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় এ ক্ষেত্রে সীমিত হস্তক্ষেপ থাকে সরকারের।
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পণ্যের ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। মূলত, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের আমদানি করা নির্দিষ্ট কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের জবাবে এই হুমকি দেন তিনি।
গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ঘটে রিপাবলিকার প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের। অবশ্য, এখনও পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেননি তিনি। আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন রিপাবলিকান এ নেতা।