শিনজিয়াং প্রদেশের বহু গ্রামের নাম বদলে ফেলেছে চীন। এর মধ্যে রয়েছে উইগুর মুসলিমদের ৬৩০ গ্রাম। জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বার্তা সংস্থা এপি ও রয়টার্সের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, নরওয়ের একটি সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরে উইগুর মুসলিমদের নিয়ে কাজ করে। তাদের সঙ্গে একত্রে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সেখানে বলা হয়েছে, নিজেদের কমিউনিস্ট আদর্শ প্রচার করতে শিনজিয়াং প্রদেশে ৩ হাজার ৬০০টি গ্রামের নাম বদলে দিয়েছে চীনের প্রশাসন।
২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগে নথিভুক্ত ২৫ হাজার গ্রামের নাম নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে সংস্থা দুটি। সেখানে তারা দেখতে পেয়েছে, ৩ হাজার ৬০০টি গ্রামের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, এর মধ্যে প্রায় ৬৩০টি গ্রাম সরাসরি উইগুর মুসলিমদের। তাদের গ্রামের নামের সঙ্গে উইগুর বা মুসলিম সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট শব্দ যুক্ত ছিল। সেই শব্দগুলো বাদ দিয়ে নতুন নামকরণ করা হয়েছে।
কয়েকটি উদাহরণও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। কোনো কোনো গ্রামের নামের সঙ্গে দুতার শব্দটি যুক্ত ছিল, যার অর্থ উইগুর বাদ্যযন্ত্র। অথবা কোনো কোনো নামের সঙ্গে মাজার শব্দ যুক্ত ছিল। তা বদলে ঐক্য, সম্প্রীতি, আনন্দের মতো শব্দ বসানো হয়েছে। এই ধরনের শব্দ চীনের শাসক বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করেন। এই শব্দগুলোর সঙ্গে কমিউনিস্ট শাসনের যোগ আছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সুফি শব্দ হোজা, হানিকা কিংবা বকসি’র মতো শব্দও বদলে দেওয়া হয়েছে। অবলুপ্ত করা হয়েছে ১৯৪৯ সালের আগের উইগুর ইতিহাস।
শিনজিয়াং অঞ্চলে এভাবে আরও বহু গ্রামের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু অন্য জনজাতির গ্রাম আছে বলেও মনে করা হচ্ছে। মূলত ঐতিহ্য ধ্বংস করতেই এসব কাজ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
এ বিষয়ে চীনের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে চায়নি বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
চীন-কাজাখস্তান সীমান্তে প্রায় এক কোটি উইগুর মুসলিম বসবাস করেন। দীর্ঘ দিন ধরে তাদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ সামনে আসছে। এ নিয়ে চীনকে সতর্ক করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। এতে তাদের ওপর নির্যাতন থামেনি।