রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের গ্লুশকোভো শহরের কাছে অভিযান চালানোর সময় সেম নদীর ওপর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু ধ্বংস করার দাবি করেছে ইউক্রেন। ক্রেমলিন সেতুটি ব্যবহার করে সেনা সরবরাহ করে আসছিল। সেতুটি ধ্বংস হওয়ায় সেই কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, কুরস্কে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করছে ইউক্রেনীয় সেনারা।
দখল করা অঞ্চলগুলোকে ‘বিনিময় তহবিল’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলগুলোর সঙ্গে ইউক্রেনে মস্কোর দখল করা অঞ্চলগুলো বিনিময় করা যেতে পারে।’
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে শুক্রবার গভীর রাতে বলেন, প্রথমবারের মতো কুরস্ক অঞ্চলে পশ্চিমাদের তৈরি রকেট লঞ্চার, সম্ভবত মার্কিন হিমার্স দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। সেতুর ওপর হামলার ফলে সেটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। একই সঙ্গে সেখান থেকে বেসামরিকদের সরানোর কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরা নিহত হয়েছেন।
সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়াল। ইউক্রেনের চালানো আকস্মিক এই অভিযানের মুখে রাশিয়ার এক লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার কুরস্কের বেশ কিছু এলাকা কিয়েভ দখল করলেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের একজন জ্যেষ্ঠ সহযোগী বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ড দখলে আগ্রহী নয় ইউক্রেন।’
গত ৬ আগস্ট সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে আকস্মিক আক্রমণ চালায় ইউক্রেনীয় বাহিনী।
এর পর থেকে সেখানে দুই পক্ষের লড়াই চলছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল ওলেকজান্ডার সিরস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলের প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে। পরে গত বুধবার ইউক্রেনের জেনারেলের এই দাবিকে উড়িয়ে দেন জাতিসংঘে রাশিয়ার ডেপুটি রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন, ‘এই আক্রমণের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো রাশিয়াকে সংঘাত অবসানে সুষ্ঠু একটি শান্তি আলোচনায় বসতে বাধ্য করা। ইউক্রেনীয় বাহিনী দেখিয়ে দিচ্ছে, তারা রাশিয়ার ভূখণ্ড দখল করতে সক্ষম।
আর এটাই হবে রাশিয়াকে আলোচনায় বসতে চাপে ফেলার একটি প্রমাণিত ও কার্যকর উপায়।’
গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বলেন, ‘রুশ সেনাদের সঙ্গে লড়াই করে ইউক্রেনীয় সেনারা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। তিন কিলোমিটার পর্যন্ত কয়েকটি এলাকায় ইউক্রেনীয় সেনারা অগ্রসর হয়েছে।’
এদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর অগ্রসর অব্যাহত থাকায় ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা সোমবার থেকে সেখানকার পাঁচটি গ্রাম খালি করবেন। টেলিগ্রামে বেলগোরোদের গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ বলেছেন, ‘সোমবার থেকে আমরা পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দাদের প্রবেশ বন্ধ করে দেব। এ ছাড়া বাসিন্দাদের সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছি।’