আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে গত সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতভর লড়াইয়ে প্রায় ১০০ সৈন্য প্রাণ হারিয়েছেন। আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, সংঘাতে তাদের ৪৯ জন সৈন্য মারা গেছেন। আর আজারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদেরও ৫০ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
আর্মেনিয়া বলছে, মঙ্গলবার সকালে জেরমুক, গোরিস, কাপানসহ বেশ কিছু শহরে ফের হামলা হয়েছে। এটিকে ‘বড় ধরনের উসকানি’ বলে অভিহিত করেছে তারা। এর পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে আর্মেনিয়া। তবে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলছে, আর্মেনিয়া আগে হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার রাশিয়া জানিয়েছে, আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মধ্যে সবশেষ লড়াই থামাতে তারা মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে।
আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে, তবে লড়াই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আর আজারবাইজান বলেছে, প্রতিবেশীদের উসকানির জবাব দেওয়ার কাজ শেষ করেছে তারা।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে প্রায় তিন দশক ধরে সংঘাত চলছে। কিছুদিন আগেও সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। সে সময় সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত তিনজন নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন। উভয়পক্ষই একে ওপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
আজারবাইজান তখন অভিযোগ তোলে, আর্মেনিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতবাদী কারাবাখ যোদ্ধারা ওই অঞ্চলে আজারি সেনাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। তাই আজারবাইজান বাধ্য হয়ে ওই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।
বিপরীতে আর্মেনিয়ার অভিযোগ ছিল, বিতর্কিত এলাকায় আজারবাইজানই প্রথম অভিযান চালিয়েছে। রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর টহলদারী এলাকায় আজারবাইজানের সেনারা ঢুকে পড়লে তাদের বাধা দেওয়া হয়।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের মধ্যে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালে যুদ্ধের পর থেকে সেটি জাতিগত আর্মেনীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০২০ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ফের দখলে নেয় আজারি সৈন্যরা। ছয় সপ্তাহের ওই যুদ্ধে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক নাগোরনো-কারাবাখে দুই হাজার রুশ শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।