আমেরিকায় চলমান ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ থেকে অন্তত ৫০ অধ্যাপককে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ও সংহতি জানানোয় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ, বিক্ষোভ–সম্পর্কিত সংবাদ ও আদালতের নথি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিক্ষোভের ভিডিও চিত্র ধারণ করার কারণে অধ্যাপকদের গ্রেফতার করার ঘটনা ঘটেছে। গ্রেফতারকৃত অধ্যাপকদের কেউ কেউ পুলিশের মারধর, হয়রানি ও হেনস্তার শিকারও হয়েছেন।
গত ১৭ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভের সূচনা করেন। বিক্ষোভ থেকে তারা গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েল সরকার ও ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্নসহ বেশ কিছু দাবি জানান।
পরে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশটির দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এছাড়া ইউরোপের অন্তত ১২টি দেশেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন। এই সময়ে আমেরিকায় আড়াই হাজারের বেশি ও ইউরোপে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এক শিক্ষার্থীকে আটক করতে গেলে পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যারলিন ফলিন। এ সময় পুলিশের পাল্টা বাধার মুখে পড়েন তিনি। ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, এই নারী অধ্যাপককে মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছেন এক পুলিশ সদস্য। আটকের পর এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিক্ষোভের ভিডিও ধারণ করছিলেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিভ তামারি। এ সময় তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তার পর গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের মারধরে তাঁর পাঁজর ও ডান হাত ভেঙে গেছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্প্রতি বিক্ষোভে যোগ দেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ অধ্যাপক। সেই অধ্যাপকদের একজন গ্রায়েম ব্লেয়ার। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়ার শঙ্কা নিয়েই বিক্ষোভে যোগ দেন তিনি ও তার সহকর্মীরা। সেদিন তিনি গ্রেফতার না হলেও তার অন্তত চার সহকর্মী অধ্যাপককে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের শারীরিকভাবে হেনস্তাও করেন।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রফেসরস। সংগঠনটির সেন্টার ফর দ্য ডিফেন্স অব একাডেমিক ফ্রিডমের পরিচালক আইজ্যাক কামোলা গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাপকদের হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।