যুক্তরাজ্যের ২০ বছর-বয়সী এক তরুণী। তিনি ছোট থেকেই এক বিরল রোগে আক্রান্ত। কেন সব জেনেও চিকিৎসক তাঁকে জন্ম দিয়েছিলেন সেই প্রশ্ন তুলে মায়ের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন ওই তরুণী। সেই মামলা জিতেও গেলেন তিনি। এভি টোম্বিস, একজন প্যারা-শোজাম্পিং তারকা। তিনি স্পাইনা বিফিডা নামক একটি বিরল রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যেখানে একটি শিশুর মেরুদণ্ড মায়ের গর্ভাশয়ে থাকাকালীন ঠিকমতো বিকাশ করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে মেরুদণ্ডে ফাঁক তৈরি হয়।
এই রোগের ফলে কোনও কোনও দিন ২৪ ঘণ্টাই তাঁকে টিউবের সাহায্যে চলতে হয়। এভির মতে, তাঁর মতো মানুষের জন্মানোই উচিত হয়নি। এরপরই এভির সব রাগ গিয়ে পরে মায়ের চিকিৎসক ডাঃ ফিলিপ মিচেলের ওপর। তরুণীর অভিযোগ, চিকিৎসক ফিলিপ মিচেল মাকে গর্ভাবস্থায় সঠিক পরামর্শ দেননি। যদি তিনি মাকে বলতেন তাঁর সন্তান স্পাইনা বিফিডা-য় আক্রান্ত হতে পারে, আর সেই ঝুঁকি কমাতে ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার এবং ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন, তা হলে হয়তো তাঁর এই অবস্থা হত না। বা তাঁকে জন্ম দিতে চাইতেন না তাঁর মা।
এভি ক্ষতিগ্রস্ত শারীরিক অবস্থায় জন্ম নেওয়ার জন্য তার মায়ের ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এবং লন্ডন হাইকোর্টের একটি যুগান্তকারী রায়ে তিনি সেই মামলা জিতে বিশাল ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। বিচারক রোজালিন্ড কো কিউসি ডাক্তারের বিরুদ্ধে রায় দিতে গিয়ে বলেছেন ডাক্তার ফিলিপ মিচেল তার রোগীকে গর্ভধারণের আগে ফলিক অ্যাসিড খাওয়ার পরামর্শ দেননি, যা স্পিনা বিফিডা প্রতিরোধ করতে পারে। ঠিক কত টাকা ক্ষতিপূরণ জিতেছেন তা জানা না গেলেও এই বিপুল পরিমান ক্ষতিপূরণের টাকা এভির চিকিৎসায় সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এভি টোম্বিসের মা ক্যারোলিনও আদালতে সাক্ষ্য দেবার সময় জানান তাঁকে হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছিল গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন একটি ভাল ডায়েট মেনে চলতে তাতেই তাঁর শরীরে ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি নাকি পূরণ হয়ে যাবে। ক্যারোলিন জানান, যদি তাকে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের বিষয়ে স্পষ্টভাবে পরামর্শ দেওয়া হত তবে তিনি তার গর্ভধারণের পরিকল্পনা বিলম্বিত করতেন।
শুধু মেরুদণ্ডের সমস্যাই নয়, এভি বর্তমানে অন্ত্র এবং মূত্রাশয় সমস্যাতেও ভুগছেন। তা সত্ত্বেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তিনি শোজাম্পিংয়ে ক্যারিয়ার তৈরি করেছেন এবং ২০১৮ সালে ‘ইন্সপিরেশন ইয়াং পারসন অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছেন।