আগাম নির্বাচনের দাবিতে আবারও লং মার্চের ডাক দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আগামী শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত তার সমর্থকদের নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি তোশাখানা মামলায় পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) রায়ের বিরুদ্ধে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আপিল খারিজ করে দেন স্থানীয় হাইকোর্ট। তবে নির্বাচনে অংশ নিতে তার জন্য কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আদালতের বিচারপতি। গত শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় কোষাগারে উপহার জমাদান সংক্রান্ত মামলায় ইমরান খানের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে রায় দেয় নির্বাচন কমিশন। সেসময় খবর ছড়ায়, আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকেও নিষিদ্ধ থাকবেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
এরই প্রতিবাদে সম্প্রতি ইমরান খানের সমর্থকরা ছোট পরিসরে মিছিল বের করেন। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান বলেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে লাহোরের লিবার্টি স্কয়ার থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত লং মার্চে তার সমর্থকদের সঙ্গে অংশ নেবেন তিনি। এই দুই শহরের মধ্যে দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার (২৩৬ মাইল)।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি অবিলম্বে নির্বাচন ঘোষণা করার জন্য সরকারকে বার্তা দিতে চাই এই লং মার্চের মধ্যদিয়ে। দলের সদস্য ও সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলারও আহ্বানও জানান তিনি। দেশের ইতিহাসে এটাই হবে সবচেয়ে বড় লংমার্চ বলেও উল্লেখ করেন ইমরান খান।
এদিকে, শাহবাজ শরিফের সরকার এরইমধ্যে বলেছে যে, বিক্ষোভকারীদের ইসলামাবাদে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩০ হাজার আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। বিক্ষোভকারীরা আসার আগে সমস্ত প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ ইসলামাবাদে কয়েকশ কন্টেইনার পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
গত এপ্রিল মাসে আইনসভায় অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এরপর দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে সারাদেশে বিক্ষোভ করেন তার দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। কিন্তু সরকার বলছে যে আগামী বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সম্প্রতি কয়েক দফায় বন্যা দেশটির মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। বেড়েছে সব খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের দাম। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।