ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত ধনকুবের গৌতম আদানির শেয়ারবাজার ‘কেলেঙ্কারি’ নিয়ে সম্প্রতি তোলপাড় শুরু হয়েছে। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
এ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীর নীরব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরস। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৯২ বছর বয়সী সোরস প্রশ্ন রাখেন, কেন আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এখনো নীরব? ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে এমন পরিস্থিতি কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জর্জ সোরস আরও বলেন, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতির যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে পার্লামেন্ট ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
তার এমন মন্তব্যের পর ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, আদানিকাণ্ড নিয়ে মোদীর উত্তর চেয়ে ‘ভারত বিরোধী কাজ’ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি আরও বলেন, ‘জর্জ সোরসকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য আমি প্রত্যেক ভারতীয়কে অনুরোধ করছি।’
তার এমন কড়া বক্তব্যের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বললেন, তিনি বুড়ো, বড়লোক এবং একগুঁয়ে স্বভাবের।’ অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ব্রাউনের সঙ্গে বৈঠকের পর জয়শঙ্কর বলেন, তিনি এখনো মনে করেন তার কথাতেই গোটা বিশ্ব চলবে।
দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, শেয়ারবাজারের কেলেঙ্কারি আদানির ‘ফারাওবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে’ প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একই সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও আদানির ‘ঘনিষ্ঠ’ সহযোগী নরেন্দ্র মোদীর জন্যও রাজনৈতিকভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় পুঁজিবাদকে কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন করেছে এই শেয়ার কেলেঙ্কারি।
গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা হিনডেনবার্গ রিসার্চ বিশ্বের অন্যতম ধনী টাইকুন আদানির প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্টক ম্যানিপুলেশন ও জালিয়াতির অভিযোগ তোলে। যদিও আদানি গ্রুপ বলে আসছে, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং একটি দীর্ঘ যুক্তি খণ্ডন প্রকাশ করেছে তারা।