ইউরোপের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনায় অগ্ন্যুৎপাত দেখতে ভিড় জমানো পর্যটকদের অশোভন আচরণ সমালোচনার জন্য দিয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি মাউন্ট এটনায় অগ্ন্যুৎপাতের পর কিছু পর্যটককে উত্তপ্ত লাভার পাথরে সসেজ রান্না করতে ও কফি তৈরি করতে দেখা গেছে। ২০ বছর ধরে এই অঞ্চল নিয়ে কাজ করা ফটো সাংবাদিক জুসেপ্পে ডিসতেফানো এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডিসতেফানো দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘কেউ একজন লাভার পাথরে সসেজ রোস্ট করেছে, আর আরেকজনকে আমি চিনি যে একটি ইতালীয় কফি মেকার দিয়ে কফি তৈরি করেছে।
এই সসেজ রান্নার ঘটনাটি ইউনেসকো এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত দেয়, যেখানে অনভিজ্ঞ মানুষ টেনিস জুতা পরে ও অল্প জ্ঞান নিয়ে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খ্যাতির আশায় যাচ্ছে। বর্তমানে, নিয়ম অনুযায়ী মানুষকে লাভা প্রবাহ থেকে কমপক্ষে ৫০০ মিটার দূরে থাকতে হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, পর্যটকরা নিয়মগুলো অবাধে লঙ্ঘন করছে।
ডিসতেফানো বলেন, ‘এই ১২ দিনে অগ্ন্যুৎপাত চলাকালীন আমরা অনেক অদ্ভুত পরিস্থিতি দেখেছি।কিছু মানুষ প্লাস্টিকের ব্যাগ পায়ে জড়িয়ে লাভার দিকে হাঁটছে, যাতে বরফ বা তুষার পেরিয়ে তাদের জুতা ভিজে না যায়।’
অদ্ভুত অনুরোধ
এ ছাড়া প্রতিবার মাউন্ট এটনায় অগ্ন্যুৎপাত হলে ডিসতেফানো নানা রকম ক্লায়েন্টের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়ে থাকেন। এ বছর একজন মদ উৎপাদক তাকে অনুরোধ করেন, যাতে লাভার পাশে একটি ওয়াইনের বোতলের ছবি তোলা হয় এবং তারপর সেই বোতলটি লাভায় ধ্বংস হওয়ার মুহূর্তও ক্যামেরাবন্দি করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি আরো নানা রকমের অনুরোধ পেয়েছি, যেমন কিছু মানুষ লাভার ওপর হাঁটতে চায়।
এক ব্যক্তি চেয়েছিলেন, আমি যেন তার সঙ্গে লাভার ওপর রান্না করি, কিন্তু আমি তা প্রত্যাখ্যান করেছি।’
বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় স্তরিত আগ্নেয়গিরি হওয়ার পাশাপাশি মাউন্ট এটনা ইউরোপের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি, যার উচ্চতা প্রায় ১১ হাজার ফুট। ২০২৩ সালে আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ছাই সিসিলির অন্যতম বৃহত্তম বিমানবন্দর বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল, যার ফলে অনেক ফ্লাইট বিলম্বিত, বাতিল ও অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।