যুক্তরাষ্ট্রে খুনের দায়ে প্রায় চার দশক ধরে সাজা খাটছেন এমন এক ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। কারণ নতুন ডিএনএ প্রমাণ থেকে দেখা যাচ্ছে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে ভিন্ন এক ব্যক্তি।
১৯৮৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় রবার্টা উইডারমায়ারকে হত্যা এবং দুটি হত্যা প্রচেষ্টার দায়ে মরিস হেস্টিংস ৩৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দী ছিলেন। কিন্তু নতুন ডিএনএ প্রমাণ ভিন্ন এক ব্যক্তির দিকে নির্দেশ করেছে যিনি ২০২০ সালে কারাগারের মধ্যে মারা গিয়েছিলেন।
হেস্টিংসের বয়স এখন ৬৯ বছর এবং তার বিরুদ্ধে সাজা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর গত ২০ অক্টোবর তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
লস এঞ্জেলেস কাউন্টির ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি জর্জ গ্যাসকোন হেস্টিংসের মামলাটিকে একটি ‘ভয়ংকর অবিচার’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বিচার ব্যবস্থা নিখুঁত নয়, এবং যখন আমরা নতুন প্রমাণের বিষয়ে জানতে পারি যার জন্য রায়ের প্রতি আমাদের আস্থা বিনষ্ট হয়ে যায়, তখন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া আমাদের একটি বাধ্যবাধকতা।
১৯৮৩ সালে রবার্টা উইডারমায়ারকে তার গাড়ির বুটের মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। তার মাথায় একটি গুলির ক্ষত ছিল। হত্যার আগে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল। এরপর হেস্টিংসের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং সরকারি কৌঁসুলিরা আর্জিতে তার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন।
এ নিয়ে বিচারে প্রথম দফায় জুরিরা একমত হতে পারেননি। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় জুরিরা তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ১৯৮৮ সালে তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়।
ময়নাতদন্তের সময় ভিকটিমের মুখ থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় বীর্যের উপস্থিতি ধরা পড়ে। গ্রেফতার হওয়ার মুহূর্ত থেকেই হেস্টিংস নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু ২০০০ সালে ঐ নমুনার ডিএনএ পরীক্ষার অনুরোধ ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি খারিজ করে দেন।
অবশেষে ২০২১ সালে তিনি রাষ্ট্র পক্ষকে বোঝাতে সক্ষম হন এবং জুন মাসে ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যায় যে নমুনায় সংগ্রহ করা বীর্য তার নয়। এর পর ডিএনএ প্রোফাইল এমন এমন ব্যক্তির সাথে মিলে যায় যিনি একটি সশস্ত্র অপহরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সেখানেও তিনি তার নারী শিকারকে একটি গাড়ির ট্রাঙ্কে ভরে রেখেছিলেন।
তার বিরুদ্ধে সাজা খারিজ হওয়ার ওপর গত ২০ অক্টোবরের শুনানির পর হেস্টিংস সাংবাদিকদের বলেছেন, বিনাদোষে ৩৮ বছর আটক থাকার ঘটনা নিয়ে তার মধ্যে কোন তিক্ততা নেই। এবং বাকি জীবনটা তিনি উপভোগ করতে চান।
হেস্টিংসকে বলেছেন, “আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না, আমি কোন তিক্ত মানুষ না, তবে আমি এখন আমার জীবনকে উপভোগ করতে চাই।”