এ সময় সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের মহাপ্রশাসক এবং অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায়। দমদম পৌরসভা, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এবং সিইএসসির চেষ্টায় কামানটি খুঁড়ে বের করা হয়।
বিপ্লব জানান, ১০ ফুট ৮ ইঞ্চি দীর্ঘ কামানটির প্রায় এক ফুট মাটির ওপরে ছিল। বাকি অংশ ছিল মাটির নিচে। কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কানুন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সহযোগিতায় সেটি উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশদের তৈরি কামানটির নকশা করা হয়েছিল ১৭৬৩ সালে। ধরা যেতে পারে ১৭৭০ সালে কামানটি তৈরি করা হয়েছিল।’ ছয় হাজার কেজি ওজনের ওই কামানটি ১৮ কেজি ওজনের গোলা এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ গজ দূরে ছুড়তে সক্ষম ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে দমদমের ঐতিহাসিক ক্লাইভ হাউস প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান কামানটি যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল। পরবর্তীকালে সম্ভবত যশোর রোড থেকে দমদম সেন্ট্রাল জেলে ঢোকার প্রবেশ দ্বারে সেটি রাখা ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কামানের মুখের দিকের অংশ মাটির বাইরে বেরিয়ে থাকায় অনেকেই সেটি জঞ্জাল ফেলার জন্য ব্যবহার করতেন। মাটির তলায় কামানটিকে ঘিরে ছিল নানা কেবল। তাই সাবধানে খননকাজ চালাতে হয়েছে।
ফিরহাদ বুধবার বলেন, ‘যেহেতু এই সম্পত্তি আদালতের, তাই আদালত যেভাবে চাইবে সেভাবে আলিপুর বা অন্য জায়গায় তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’ প্রাথমিকভাবে কামানটিকে কলকাতা হাইকোর্টের জুডিশিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে পাঠানো হতে পারে বলে বিপ্লব জানিয়েছেন।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, সত্তরের দশকে টালিগঞ্জ-দমদম মেট্রো রেলের জন্য খননকাজের সময়ও মাটির নিচ থেকে কয়েকটি প্রাচীন কামান মিলেছিল। তবে এই প্রথমবার এভাবে কোনো প্রাচীন তোপ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হলো।
বিপ্লব বলেন, ‘এটা আমাদের কলকাতার ঐতিহ্য। আমাদের রাজ্যের মুকুটে একটা পালক লাগল। এই প্রথম এমন একটা হেরিটেজ আমরা মাটি খুঁড়ে বের করলাম। কলকাতায় এ রকম অনেকগুলো কামান আছে। আমরা চেষ্টা করছি সেগুলো একে একে উদ্ধার করার।’