English

22 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

শ্রীলঙ্কায় নারী অক্টোরিক্সা চালক দীপ্তির লড়াই

- Advertisements -

দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কায় নারী অটোরিক্সা চালকের দেখা মেলা বিরল। তাদের অন্যতম লাসান্দা দীপ্তি (৪৩)। সংসারের হাল ধরতে তিনি এখন অটোরিক্সা চালক। কিন্তু ভাল নেই তিনি। কারণ, দেশে ভয়াবহ জ্বালানি সঙ্কট। মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। আয় কমে গেছে মানুষের। জ্বালানি থেকে শুরু করে ওষুধ পর্যন্ত সবকিছুতে সঙ্কট। পেট্রোল নিতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কখনো কখনো তা ১২ ঘন্টা বা তারও বেশি।

তারপরও ৫ সদস্যের পরিবারের হাল ধরতে সাত বছর আগে এই কাজ শুরু করতে হয়েছে দীপ্তিকে। তিনি স্থানীয় পিকমি অ্যাপ ব্যবহার করেন। কিন্তু আর্থিক সঙ্কট আঘাত করার পর থেকে পর্যাপ্ত পেট্রোল পাচ্ছেন না তিনি। তার ওপর কমেছে রাইডের সংখ্যা। বছর বছর মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে শতকরা ৩০ ভাগ হারে। জানুয়ারিতে তার মাসিক আয় ছিল শ্রীলঙ্কান ৫০ হাজার রুপি। কিন্তু তা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। দীপ্তি বলেন, দিনের বেশির ভাগ সময় আমাকে পেট্রোলের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কখনো কখনো বিকাল তিনটা পর্যন্ত পেট্রোল স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি। আবার এমনও হয়েছে আমি লাইনের সামনে চলে গিয়েছি, এমন সময় পেট্রোল ফুরিয়ে গেছে। বাণিজ্যিক শহর কলম্বোর উপশহরে তার বাস। তার সঙ্গে আছেন তার মা, তিনটি ছোট ভাই। স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে গেছেন। এক মেয়ে আছে। তাকে বিয়ে দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

দীপ্তি বলেন, মধ্য মে’তে তিনি পেট্রোল স্টেশনের লাইনে আড়াই দিন অপেক্ষায় ছিলেন। এক্ষেত্রে তাকে সাহায্য করেছিলেন এক ভাই। তার ভাষায়- এই দুর্ভোগের কথা বর্ণনা করার মতো শব্দ আমার জানা নেই। রাতের বেলা গাড়ি চালাতে অনেক সময় নিজেকে নিরাপদ মনে হয় না। কিন্তু উপায় তো নেই।

২০২১ সালের অক্টোবরের পর শ্রীলঙ্কায় পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৫৯ ভাগ। শ্রীলঙ্কায় বর্তমান এই সঙ্কটের মূলে আছে করোনা মহামারি। এ কারণে পর্যটন নির্ভর দেশটিতে কোনো পর্যটক যাননি। বিদেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের রেমিটেন্স কমে যায়। এসব কারণে দেশটি অর্থনীতির এক গভীর সঙ্কটে নিমজ্জিত। তারই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হারাতে হয় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসেকে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় এসেছেন রণিল বীক্রমাসিংহে। তিনি গত সপ্তাহে নতুন অর্থমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। ছয় সপ্তাহের মধ্যে তারা একটি বাজেট দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু দীপ্তিদের জন্য কি সুবিধা থাকবে তা স্পষ্ট নয়। দীপ্তির পরিবারে আরেকটি অটোরিক্সা আছে। সেটা সাধারণত চালায় তার এক ভাই। সেটা মেরামত করার প্রয়োজন। কিন্তু এর খরচ বহনে অক্ষম তার পরিবার।

করোনা মহামারির আগে ঋণ নিয়ে এক খ- জমি কিনেছেন দীপ্তি। সেখানে কমপক্ষে এক লাখ রুপি ঋণ বাকি আছে। তা পরিশোধ করতে হবে তাকে। অন্যদিকে তিনি এখন নানী হয়েছেন। তিন মাস বয়সী নাতনী আছে তার। মেয়ের বসবাস তার আবাসস্থল থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রউপকূলে মাতারা’য়। তাকে দেখতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনিতেই নিজের সংসারে একমুঠো ভাত আর সবজি যোগার করতেই তাকে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন