বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ল্যাবে উৎপাদিত মাংস-মাছ ও দুধের ব্যবহার, বিক্রি, আমদানি ও রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপের দেশ ইতালি। গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দেশটির চেম্বার অব ডেপুটিজ এই বিলটি অনুমোদন করেছে।
বিলটির পক্ষে ১৫৯ ভোটের বিপরীতে বিপক্ষে ছিল মাত্র ৫৩ ভোট। অর্থাৎ ইতালিয়ান সিনেটে যাওয়ার আগেই বিলটি পাস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে সোমবার (২০ নভেম্বর) ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, নতুন আইন লঙ্ঘন করলে কোনো কারখানা কিংবা প্রতিষ্ঠানকে দেড় লাখ ইউরো বা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। তাছাড়া তিন বছরের জন্য সরকারি তহবিল পাওয়ার অধিকার হারানোর পাশাপাশি ওই কারখানা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধও হয়ে যেতে পারে।
দেশটির কৃষিমন্ত্রীর জন্য আইনটি পাস হওয়া বড় ধরনের বিজয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স। কারণ বছরখানেক আগে থেকেই তিনি কৃত্রিম খাবারের বিরুদ্ধে জোরালো প্রচার শুরু করেন। তাকে সমর্থনের জন্য তিনি আইনপ্রণেতাদের ধন্যবাদ জানান।
নতুন বিলের বিষয়ে ইতালির কৃষিমন্ত্রী ললোব্রিগিদা বলেছেন, এটি মানবদেহের সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ইতালির উৎপাদন ব্যবস্থা, হাজার হাজার চাকরি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করবে।
এদিকে, ইতালির কৃষকরা এই পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও, কিছু প্রাণী ও পরিবেশবাদী সংগঠন এর ঘোর বিরোধীতা করেছে। এসব সংগঠন পরীক্ষাগারে তৈরি খাবারকে কার্বন নির্গমন, খাদ্য সুরক্ষা ও পরিবেশকে রক্ষা করাসহ নানা সমস্যার সমাধান হিসেবে দেখে। সংগঠনগুলোর দাবি, এই বিলটি তাদের জন্য বিশাল বড় একটি ধাক্কা।
তবে বিলের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপের গুড-ফুড ইনস্টিটিউট থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিল ইতালীয়দের বলে দেয় যে, তারা কী খেতে পারবে, আর কী খেতে পারবে না। এটি পাসের ইতালিকে একটি নতুন চাকরি সৃষ্টিকারী শিল্প থেকে বাদ দেওয়া হবে এবং আরও জলবায়ুবান্ধব খাবার বিক্রি করতে বাধা দেওয়া হবে, এটা সত্যিই হতাশাজনক।
গত বছরের নভেম্বরে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের পর যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) কৃত্রিম মুরগির মাংস খাওয়ার অনুমোদন দেয়। তারও আগে ২০২০ সালে ল্যাবে তৈরি মুরগির মাংসকে নাগেটে ব্যবহার করার জন্য অনুমোদন দেয় সিঙ্গাপুর।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এখন পর্যন্ত কৃত্রিম খাবারের অনুমোদন না দিলেও, ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে।