তারা ছিলেন ইমরান খানের খুবই ঘনিষ্ঠ। কিন্তু প্রতিকূল সময়ে ছেড়েছেন ইমরান খানের হাত। দল ছেড়ে গড়েছেন নিজের দল। কিন্তু তাতেও হয়নি লাভ। জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে হয়েছে শোচনীয় পরাজয়। দলের প্রার্থীরা হেরেছেন, এমনকি নিজেরাও হেরেছেন। এমন ভরাডুবির পর শুধু দলীয় প্রধানের পদ নয়, এবার রাজনীতিও ছাড়ার ঘোষণা দিলেন তারা।
বলছি খাইবার পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খট্টক ও জাহাঙ্গীর তারিনের কথা। ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর পিটিআইকে রাজনীতির মাঠ থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। সেই প্রতিকূল সময়ে দল ছেড়ে দেন অনেকে। কঠিন সময়ে ইমরানকে ত্যাগ করা খ্যাতনামা রাজনীতিকদের মধ্যে পারভেজ খট্টক অন্যতম।
নির্বাচনী প্রচারের সময় খট্টক জোর গলায় দাবি করেন, তিনি আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আর পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জয়ের পর তাঁর সঙ্গে জোট করবেন। কিন্তু তাঁর ভরাডুবি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসার আশার দূরাশাই থাকল। উল্টো প্রভাবশালী এই নেতা এখন নিজেই ছাড়লেন রাজনীত।
অপর নেতা চিনি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর তারিনও এক সময় ইমরানের খুব কাছের ছিলেন। নির্বাচনের আগে তিনি পিটিআই ছেড়ে গঠন করেন ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি)। তবে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তাঁর দলও চরমভাবে পরাজিত হয়। তিনি নিজেও হেরেছেন। মুলতানে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে যান। এ ছাড়া নিজের জন্মস্থান লোধরানেও হেরেছেন পিএমএল-এন প্রার্থীর কাছে।
জাহাঙ্গীর তারিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে বিজয়ী প্রতিদ্বন্দ্বীকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, আমি শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি আইপিপির চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে রাজনীতিও ছাড়ছি। দেশের সমৃদ্ধির জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে কাজ করে যাব।
তাদের পরাজয়ের পর প্রশ্ন ওঠে, কেন ভোটাররা খট্টক ও তারিনের মতো হেভিওয়েট রাজনৈতিক প্রার্থীদের ভোট দেননি? এ বিষয়ে পাকিস্তানের সিনিয়র সাংবাদিক লায়েক আলি খান বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় যে দলগুলো ইমরানের সমালোচনা করেছিল, সেগুলোকেই জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে দলছুট খট্টকের অপমানজনক পরাজয় হয়েছে। নির্বাচনে ইমরানের সঙ্গী নেতারা রাজনৈতিকভাবে প্রতাপশালী প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছেন।
দলীয় প্রধানের পদ ছাড়লেন জামায়াতে ইসলামীর আমির: নির্বাচনে হেরে শুধু দলীয় প্রধানের পদ ছেড়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল হক। সোমবার পদত্যাগের এ ঘোষণা দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মধ্যে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি আনুগত্যে এতটুকু ঘাটতি হয়নি অনেক নেতার। হুমকি-ধমকি কিংবা দল ছেড়ে দেওয়ার নানা চেষ্টার পরও তারা অটল ছিলেন। দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। পরেছেন জয়ের মালাও। উল্টো চিত্র দেখা গেছে ইমরানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা নেতাদের ক্ষেত্রে। পিটিআই ছেড়ে অন্য দলের সঙ্গে জোট করা নেতাদের হয়েছে ভরাডুবি।