ভারতের মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়ীন শহরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশটিতে তোলপাড় চলছে। দেশটিতে এ নির্যাতনের ঘটনা আরও নির্মম হয়ে উঠেছে, কারণ সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে ১২ বছর বয়সী ওই কন্যা-শিশুটি রক্তাক্ত এবং প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় নানা লোকের কাছে সহায়তা চাইছে, তবে সবাই তাকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেষমেশ একটি আশ্রমের পুরোহিত তাকে দেখতে পেয়ে নিজের জামা খুলে ওই শিশুটিকে দেন এবং তিনিই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ বলছে, ওই শিশুটির শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে ইন্দোরের বড় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তার সফল অস্ত্রোপচারও হয়েছে।
উজ্জয়ীনের পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট সচিন শর্মা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশুটিকে যে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, যদিও ঘটনার তিনদিন পার হয়ে গেলেও কাউকেই এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম জানিয়েছেন ঘটনার তদন্ত করতে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছে। উজ্জয়ীনের পুলিশ সুপার সচিন শর্মার কথায়, তাদের হাতে এখন দুটি ভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। তার ভিত্তিতেই তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
শর্মা বলেন, সিসিটিভির ফুটেজে ওই কন্যা-শিশুর সঙ্গে যে পাঁচজনকে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে, তাদেরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একটি অটোরিকশায় চাপতেও দেখা গিয়েছিল ওই শিশুটিকে। সেই অটো চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করছি আমরা। তার অটোরিকশায় রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। তবে অপরাধের সঙ্গে ওই অটো চালকের সংশ্লিষ্টতা এখনও খুঁজে পাইনি আমরা।
পুলিশ বলছে, তাদের হাতে যে দুটি সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে তার মধ্যে একটি গত সোমবার রাত তিনটার সময়কার, অন্যটি কয়েক ঘণ্টা পরের।
প্রথম ফুটেজে ওই শিশুটিকে তার স্কুলের পোষাক পরিধান করা অবস্থায় দেখা গেছে। দ্বিতীয়টিতে তাকে রক্তাক্ত এবং প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় মানুষের কাছে সহায়তা চাইতে দেখা গেছে। এর থেকে পুলিশ ধারণা করছে, সোমবার বেশ সকালের দিকেই তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
উজ্জয়ীন শহরের ১৫ কিলোমিটার দূরে বাডনগর রোডের একটি রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায়। ওই ফুটেজ ২৫ সেপ্টেম্বরের বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, যে একটি কন্যা শিশু প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় বিভিন্ন লোকের কাছে সহায়তা চাইছে। একটি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির কাছেও সে সহায়তা চায়। কিন্তু তাকে সবাই তাড়িয়ে দিচ্ছিল। তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে, সেটাও বোঝা যাচ্ছিল ওই ভিডিও ফুটেজে।
উজ্জয়ীনের পুলিশ বলছে, রাহুল শর্মা নামে এক আশ্রমের পুরোহিত তাদের ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে তারা গিয়ে কন্যা-শিশুটিকে উদ্ধার করে।
শর্মা স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জানান, তিনি মঙ্গলবার কোনও একটা কাজে বের হচ্ছিলেন, তখনই আশ্রমের সামনে ওই শিশুটিকে দেখেন।