কারাগারে মারা যাওয়া রাশিয়ার বিরোধীদলীয় রাজনীতিক অ্যালেক্সি নাভালনির মা লিউডমিয়া নাভালনায়া বলেছেন, ছেলের মরদেহ তাকে দেখানো হয়েছে। তবে মরদেহ সেটি গোপনে দাফন করতে রুশ কর্তৃপক্ষ চাপ সৃষ্টি করছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
এক ভিডিও বার্তায় নাভালনায়া বলেন, আমার ছেলেকে যে মর্গে রাখা হয়েছে, আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ছেলের মৃত্যু সনদেও সই করেছি আমি। সেখানে উল্লেখ ছিল যে নাভালনির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তবে নাভালনির স্ত্রী প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন, তার স্বামীকে হত্যা করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
লিউডমিলা নাভালনায়া আরও বলেন, আইন অনুযায়ী নাভালনির মরদেহ তার কাছে হস্তান্তর করার কথা। কিন্তু রুশ কর্তৃপক্ষ সেটা করছে না। মরদেহ দেখতে দেওয়ার সুযোগ দিলেও, দাফন নিয়ে নানা নাটক করা হচ্ছে। কোথায়, কখন, কীভাবে দাফন করা হবে সেই পরিকল্পনাও বলে দিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছয় দিন আগে উত্তর রাশিয়ার সালেখার্ড শহরের পেনাল কলোনিতে যান লিউডমিলা নাভালনায়া। সেখানে নাভালনির মরদেহ তাকে দেওয়া হয়নি। এরপর মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে তিনি ছেলেকে দাফনের অনুমতি দেওয়ার আবেদন করেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল ইয়ামালো-নেনেতের আর্কটিক পেনাল কলোনিতে বন্দী অবস্থায় মারা যান অ্যালিক্সি নাভালনি। তার মৃত্যুর খবর পেয়েই তার মা ও আইনজীবীরা সেখানে যান। কিন্তু নাভালনির মরদেহের কাছে তাদের যেতে দেওয়া হয়নি। এরপরই অভিযোগ ওঠে, নাভালনিকে কীভাবে মারা হয়েছে, সেটা যাতে প্রকাশ্যে আসতে না পারে সেজন্যই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে না।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সানফ্রান্সিসকোতে নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া ও কন্যা দাশা নাভালনায়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সে সময় ইউলিয়া বলেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার স্বামীর অসমাপ্ত লড়াই চালিয়ে যাবো। অঙ্গীকার করেন। অবশ্য নাভালনিকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন।
রাজনৈতিক জীবনে পুতিনের কট্টর সমালোচক ছিলেন নাভালনি। বিশেষ করে রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। তিনি কয়েক যুগ ধরেই রাশিয়ার বর্তমান সরকার ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনও চালিয়েছেন।