স্ত্রী সালতানাত নুকেনোভাকে নির্মমভাবে হত্যা করায় কাজাখস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী কুয়ান্দিক বিশিমবায়েভকে (৪৪) ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ মে কাজাখস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তাকে এ দণ্ডাদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ৮ নভেম্বর স্ত্রীকে নিয়ে সাবেক রাজধানী আলমাতির একটি হোটেলে বেড়াতে যান কুয়ান্দিক। সেখানে বিয়ের এক বছর না হতেই স্বামীর মারধর ও নির্যাতনে মারা যান সালতানাত।
বিবিসি জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলাকালে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেখানে দেখা যায়, কুয়ান্দিক তার স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করেন, যার ফলে তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, ৯ নভেম্বর স্থানীয় সময় সকালে হোটেলের একটি রেস্তোরাঁয় সালতানাতকে মারধর করেন কুয়ান্দিক। এছাড়াও স্ত্রীকে লাথি মারা ও চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে। তবে পরবর্তীতে কী হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
আদালতে কুয়ান্দিকের বিচার হলেও কাজাখস্তানজুড়ে প্রতিবছর শত শত নারী তাদের সঙ্গীর হাতে খুন হন, সেগুলোর বিচার হয় না। জাতিসংঘের হিসাবে, দেশটির পারিবারিক সহিংসতার প্রতি চারটি ঘটনার একটি বিচারের জন্য ওঠে। অনেক নারী এ বিষয়ে মুখ খুলতে ভয় পায়।
জাতিসংঘের হিসাবে প্রতিবছর কাজাখস্তানে প্রায় ৪০০ নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে মারা যান।
কাজাখস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে দেশটিতে পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের জন্য কাজ করা সহায়তা কেন্দ্রে (ক্রাইসিস সেন্টার) কল আসার সংখ্যা ১৪১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সালতানাত হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া আদালতকক্ষ থেকে সরাসরি দেখানোর ফলে সরকারের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এ নিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কথা বলতে শুরু করেন। এমনকি পারিবারিক সহিংসতা নিরসন আইন সংস্কারের দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করা হয়। সেখানে দেড় লাখের বেশি মানুষের সই করেছিলেন।
এরপর ১৫ এপ্রিল কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ত তোকায়েভ একটি বিলে সই করেন। সেখানে পারিবারিক সহিংসতার দায়ে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়। ২০১৭ সালে করা সেই আইনটি ছিল অফৌজদারি। আর নতুন ‘সালতানাত’স আইনে এটিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এ ধরনের ঘটনায় ভুক্তভোগী এখন নিজে অভিযোগ না জানালেও অন্যরা এ নিয়ে মামলা করতে পারবে।