বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর ভারতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ ছিল। অবশেষে রোববার (২৭ মার্চ) থেকে ফের শতভাগ আসন নিয়ে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। এর মধ্য দিয়ে সেবা খাতে গতি ফিরবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশনের (ডিজিসিএ) এক আদেশে বলা হয়েছে, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো তাদের আন্তর্জাতিক সময়সূচি অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিজিসিএ গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি চলতি বছরের ২৭ মার্চ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
মরিশাস, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকসহ মোট ৪০টি দেশের ৬০টি এয়ারলাইন্স এই সময়সূচির অধীনে ভারত থেকে অন্যান্য দেশে এবং অন্য দেশ থেকে ভারতে এক হাজার ৭৮৩টি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে।
২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনার প্রভাবে দেশব্যাপী লকডাউনের ফলে ভারতের সেবা খাত ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে বাজে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিল। তবে ফের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হওয়ায় এই খাত পুনরায় লাভের মুখ দেখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে নীমরানা হোটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সোনাভি কায়কার বলেন, দুই বছর কঠিন সময় পার করার পর পর্যটন ও হসপিটালিটি শিল্পের জন্য আজকের দিনটি একটি খুশির দিন। যদিও খাতটি এরই মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ভ্রমণকারীদের চলাচলে সুবিধা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি আগামী অর্থবছরে পর্যটন ও হসপিটালিটি খাত করোনাকালীন ক্ষতির ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পুনরুদ্ধার করতে পারবে। এটি অভ্যন্তরীণ ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল ঐতিহ্যবাহী হোটেল ব্যবসাকে ত্বরান্বিত করবে। করোনা মহামারির সময় পরিস্থিতির সঙ্গে এ খাত খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি, কারণ এক্ষেত্রে তেমন অবকাঠামো ছিল না।
বার্ড গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক গৌরব ভাটিয়া বলেন, গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণের ব্যস্ত মৌসুম শুরু হওয়ার আগে সঠিক সময়েই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। এ সময় এয়ারলাইন্সগুলো গ্রীষ্মকালীন ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এই পদক্ষেপের ফলে পর্যটন ও হসপিটালিটি শিল্পও উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্ত আসন্ন ব্যস্ত মৌসুমের আগে দেশের বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্বস্তি দেবে। কারণ এর ফলে প্লেনের যে আকাশচুম্বী ভাড়া ছিল সেটি কমে আসবে। তবে ভারতকে অবশ্যই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জারি রাখতে হবে। ভ্রমণের সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যদিও অনেক দেশ মাস্ক পরিধানের কঠোরতা শিথিল করেছে।