ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মোট ৭৮ জন মুসলিম প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাদের মধ্যে জয়ী হয়েছেন ২৪ জন। সবচেয়ে বেশি মুসলিম প্রার্থী জিতেছেন কংগ্রেস থেকে।
এনডিটিভি ও এপিবি লাইভের খবরে বলা হয়েছে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস থেকে সাতজন মুসলিম নেতা জয়ী হয়েছেন। আর পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস থেকে জয়ী হয়েছেন পাঁচজন। এ ছাড়া সমাজবাদী দল থেকে জয়ী হয়েছেন চারজন। অন্যরা অন্যান্য দল থেকে জয়ী হয়েছেন।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থী ১১৫ জন থাকলেও এবার সংখ্যাটি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে জয়ী মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী ২৪ জন প্রার্থীর মধ্যে অন্যতম ভারতের সাবেক ক্রিকেট তারকা ইউসুফ পাঠান। তিনি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বহরমপুর আসনের প্রার্থী হয়েছিলেন। এই আসনটি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রার্থী ছয়বারের এমপি অধীর রঞ্জন চৌধুরির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু রাজনীতিতে নবাগত ইউসুফ পাঠান অভিজ্ঞ রাজনীতিক অধীর রঞ্জনকে ৮৫০২২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর আসনে কংগ্রেসের ইমরান মাসুদ জয়ী হয়েছেন। তিনি নিকটতম বিজেপি প্রার্থী রাঘব লখনপাল থেকে ৬৪৫৪২ ভোট বেশি পেয়েছেন।
উত্তর প্রদেশের কাইরানা আসন থেকে জয়ী হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির ২৯ বছর বয়সী নারী প্রার্থী ইকরা চৌধুরী। তিনি ভারতীয় জনতা দলের (বিজেপি) প্রার্থী প্রদীপ কুমারকে ৬৯,১১৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। তিনি অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন।
উত্তর প্রদেশের গাজীপুর আসন থেকে জয়ী সমাজবাদী পার্টির আরেক প্রার্থী আফজাল আনসারি। প্রায় ৫ লাখ ৪০ হাজার ভোট পাওয়া আনসারি এর আগেও এই আসন থেকে লোকসভার সদস্য ছিলেন।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) দলের নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি তিন লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে তার হায়দ্রাবাদের আসন ধরে রেখেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিজেপির মাধবী লতা কমপেল্লা।
জম্মু ও কাশ্মীরের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লোকসভা ভোটে জয় লাভ করতে পারেননি। বারামুলায় ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আবদুল্লাকে হারিয়েছেন নির্দলীয় প্রার্থী ও সাবেক বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার রশিদ।
এদিকে অনন্তনাগ-রাজৌরিতে পিডিপি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতিকে হারিয়েছেন ওমরের দলের নেতা মিঞা আলতাফ। এ ছাড়া আসামের ধুবড়ি আসনে জিতেছেন সাবেক মন্ত্রী রাকিবুল হোসেন। বিহারে জিতেছে কাটিহারে প্রবীণ নেতা তারিখ আনোয়ার। এবার বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ লাদাখে জয়ী হয়েছেন শিয়া মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতা মহম্মদ হানিফা জান।
তবে ঘোষিত ফল অনুযায়ী জোটগতভাবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) মোট আসনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯৩টি। অন্যদিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের মোট আসন সংখ্যা ২৩৩টি।