ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ও বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদিকে হত্যাচেষ্টার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে পশ্চিম নিউইয়র্কে বক্তৃতা প্রদানকালে দর্শকদের সামনে বিতর্কিত এই লেখককে মারাত্মকভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।
সোমবার আইনজীবীদের সূচনা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার শুরু হয়েছে।
অভিযুক্ত হাদি মাতারের বিচারের সময় ৭৭ বছর বয়সি রুশদি সাক্ষ্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে দুই বছরের বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো রুশদি তার হামলাকারীর মুখোমুখি হবেন।
বুকার পুরস্কার বিজয়ী লেখক রুশদি ২০২২ সালের আগস্টে লেখকদের নিরাপদ রাখার বিষয়ে কথা বলতে যাচ্ছিলেন। এমন সময় মাতার চৌতাউকুয়া ইন্সটিটিউশন অ্যাম্ফিথিয়েটারে মঞ্চে তার দিকে ছুটে যান। মাতার রুশদিকে ঘাড়ে, পেটে, বুকে, হাতে এবং ডান চোখে ১২ বারের বেশি ছুরিকাঘাত করেন। এতে তিনি আংশিকভাবে অন্ধ হয়ে যান এবং তার একটি হাত স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ-আমেরিকান এই লেখক গত বছর প্রকাশিত তার ‘নাইফঃ মেডিটেশন আফটার অ্যান মার্ডার’ নামে এক স্মৃতিকথায় এই হামলা এবং তার দীর্ঘ, বেদনাদায়ক পুনরুদ্ধারের বিস্তারিত বিবরণ দেন। ১৯৮৯ সাল থেকেই রুশদি তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সে বছর প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ মুসলমানদের তীব্র নিন্দা কুড়ায়। ইরানের আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি তার মৃত্যু দাবি করে ফতোয়া জারি করেছিলেন।
রুশদি বছরের পর বছর আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু ইরান এই আদেশ কার্যকর করবে না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে তিনি বাধাহীনভাবে চলাচল করেছেন।
নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সি মাতারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা এবং হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
গত সপ্তাহে বিচারক নির্বাচন করা হয়। মাতার তিনদিনের পুরো প্রক্রিয়া জুড়ে আদালতে ছিলেন। তিনি সেখানে নোট নিয়েছেন এবং তার আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। সোমবার আদালতে হাজির হওয়ার সময় তিনি শান্তভাবে বলেন, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’।
তার আইনজীবী নাথানিয়েল ব্যারোন হুট করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং বিচারের সূচনাকাজে অংশ নেবেন না বলে ঘোষণা করেন। এর ফলে মাতার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন।