দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকে ‘হ্যালো’ বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এবার ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুঁড়েই যেনো ওই ‘হ্যালো’র জবাব দিলেন কিম জং। বাইডেন দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়ে যাওয়ার পরপরই তিনটি ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। রাজধানী পিয়ংইয়ং-এর সুনান এলাকা থেকে এক ঘণ্টা ব্যাবধানে ওই মিসাইলগুলো ছোড়া হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, দক্ষিণ কোরিয়া দিয়েই প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম এশিয়া সফর শুরু করেন বাইডেন। তার এ পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে নিরস্ত করতে পশ্চিমা প্রচেষ্টা জোরদারের অংশ হিসেবে। অথচ বাইডেনের দক্ষিণ কোরিয়া সফর শেষ হওয়ার একদিনের মাথায়ই মিসাইল উৎক্ষেপণ করে যুক্তরাষ্ট্রকে এক হাত দেখে নিলেন কিম। দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে ‘উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হুমকি’ মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়ার বিস্তার ঘটানোর অঙ্গীকার করেন বাইডেন। তিনি উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করার ব্যাপারে দেশটির নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে ‘আন্তরিক’ সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ বছরের প্রথম থেকেই একের পর এক ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করে চলেছে পিয়ংইয়ং। বুধবারের মিসাইল পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জাপানও।
তবে তারা দুটি মিসাইল সনাক্ত করতে পেরেছে। জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নবু কিশি জানান, প্রথম মিসাইলটি ৩০০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে আঘাত হানে। দ্বিতীয় মিসাইলটি ৫০ কিলোমিটার উঁচুতে উঠে এবং ৭৫০ কিলোমিটার দূরের টার্গেটে আঘাত হানে। তিনি এই উৎক্ষেপণের নিন্দা জানিয়ে বলেন, কোনোভাবেই উত্তর কোরিয়ার এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এ ধরনের পদক্ষেপ এ অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাকে ব্যহত করছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের দপ্তর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে নিজের পূর্ব উপকূল লক্ষ্য করে পরপর অন্তত তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং-এর পক্ষ থেকে অবশ্য এ সম্পর্কে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। উত্তর কোরিয়া খুব কমই নিজের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বা পরীক্ষার খবর তাৎক্ষণিকভাবে প্রচার করে।
এ নিয়ে চলতি বছর এ নিয়ে ১৬ বার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, এর মধ্যে গত ৪ই মে উত্তর কোরিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয় বলে জানায় ওয়াশিংটন।
এর আগে বাইডেনের পূর্বসুরি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কিমের সঙ্গে তিনবার সরাসরি আলোচনায় বসেন। ওইসব আলোচনায় উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ধ্বংসের ব্যাপারে কিম আন্তরিকতা দেখালেও শেষ পর্যন্ত ওই সংলাপ ব্যর্থ হয়। তখন থেকে উত্তর কোরিয়া তার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি জোরদার করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রও দফায় দফায় দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছে।