পাকিস্তানে বিকৃতকামী কিছু মানুষের লালসার শিকার হলেন ফ্রান্সের এক নারী। দুই সন্তানের সামনে ১৫ জনের বেশি দুষ্কৃতী তাকে গণধর্ষণ করল। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতা এই বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলে তাকেই ঘটনাটির জন্য দোষারোপ করা হয়। পরে পুলিশের এই কীর্তির কথা জানাজানি হতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন লাহোরের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হন হাজারের বেশি নারীও।
জানা গেছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে লাহোরের উপর দিয়ে গুজরানওয়ালা প্রদেশে যাচ্ছিলেন ফ্রান্সের ওই নারী। লাহোর হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা তার গাড়ির তেল ফুরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে স্বামীকে ফোন করে নিজের বিপদের কথা জানান তিনি। তারপর স্বামীর পরামর্শ মতো পুলিশকে ফোন করে সাহায্য করার আবেদন জানান।
কিন্তু পুলিশ আসার আগেই সেখানে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক এসে হাজির হয়। তারপর গাড়ির জানলার কাঁচ ভেঙে ওই নারীকে বাইরে বের করে তার দুই সন্তানের সামনেই একে একে ধর্ষণ করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এই পাশবিক ঘটনা ঘটলে পুলিশের কোনও টহলদারি ভ্যানকে দেখা যায়নি। এদিকে নিজেদের বিকৃত লালসা চরিতার্থ করার পর দুষ্কৃতীরা ওই নারীর তিনটি এটিএম কার্ড ও সঙ্গে থাকা টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা উমর শেখকে প্রশ্ন করা হলে ওই যুবতীকেই দোষারোপ করেন তিনি। তিনি বলেন, পাকিস্তানের কোনও পুরুষ তাদের বোন এবং মেয়েদের রাতে একা বাইরে বের হতে অনুমতি দেবেন না। ওই নারীর উচিৎ ছিল অন্য কোনও নিরাপদ রাস্তা বেছে নেওয়া বা দিনে যাতায়াত করা। না হলে ফ্রান্সের মতো পাকিস্তানেও নারীরা খুব সুরক্ষিত।
তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার এই বক্তব্যের কথা জানাজানি হতেই প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠে পাকিস্তানের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য। পোস্টার হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন হাজারের বেশি নারী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আর তারপরই ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে লাহোর পুলিশ।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন