ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার বিশ্বনেতাদের দেখাতে চান, তাঁর দেশের পরিপাটি অবস্থা যা বিশ্বমঞ্চে মোদির অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। এ কারণেই সৌন্দর্যবর্ধনের এই প্রকল্পে খরচ করা হচ্ছে প্রায় ১ হাজার কোটি রুপি।
এই উচ্ছেদ কার্যক্রমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে অনেকটা নির্দয়ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২ কোটিরও বেশি লোকের দিল্লিতে ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, গৃহহীন ছিল ৪৭ হাজার। কিন্তু অধিকারকর্মীরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা অন্তত দেড় লাখ। নতুন করে এই উচ্ছেদ অভিযানে আরও হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হলো বলে মনে করেন তারা। একই সঙ্গে সরকারের দারিদ্র্যবিমোচন নীতিরও সমালোচনা করেন অনেকে।
এই সম্মেলনকে ঘিরে গত জানুয়ারি থেকেই শত শত বাড়িঘর এবং রাস্তার পাশের স্টল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক বাসিন্দাকে ঘর থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল ঠিক কিছুক্ষণ আগে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল।
বস্তি সুরক্ষা মঞ্চের সদস্য আবদুল শাকিল বলেন, সৌন্দর্যবর্ধনের নামে নগরীর দরিদ্রদের জীবন ধ্বংস করা হচ্ছে। জি২০ সম্মেলনে ব্যবহৃত অর্থ করদাতাদের। আর সেই অর্থ দিয়েই জনগণকে উচ্ছেদ ও বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে। এর কোনো মানে হয় না।
গত জুলাইয়ে ‘কনসার্নড সিটিজেনস কালেক্টিভ’ নামের মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতির ফলে প্রায় ৩ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বনেতা এবং কূটনীতিকরা বিভিন্ন বৈঠকের সময় যেসব এলাকা পরিদর্শন করবেন সেসব জায়গা থেকে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
নয়াদিল্লির বাসিন্দা রেখা দেবী বলেন, তাঁর পরিবার ১০০ বছর ধরে যে বাড়িতে থেকেছে, সেই বাড়িও ভেঙে ফেলা হয়েছে। তিনি কাগজপত্র দেখালেও কর্তৃপক্ষ তা কর্ণপাত করেনি।
তিনি বলেন, এখন অনেক গৃহহীন এমনকি রাস্তায়ও থাকতে পারছে না। এই সম্মেলনের নামে কৃষক, শ্রমিক এবং দরিদ্ররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবে না চীনের প্রসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে তাঁর পরিবর্তে অংশ নেবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানায়।
জিনপিংয়ের যোগ না দেওয়ার ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আমি হতাশ… তবে আমি তাঁর সঙ্গে মিলিত হতে যাচ্ছি।’
তবে সেই বৈঠক কখন হতে পারে তা বলেননি বাইডেন। গত বছর ইন্দোনেশিয়ায় জি২০ সম্মেলনে বাইডেন ও জিনপিং বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।
এদিকে, সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। তাঁর বদলে আসছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।