সুইজারল্যান্ডের একটি আদালতে অভিযোগ উঠেছে, যুক্তরাজ্যের অন্যতম ধনী হিন্দুজা পরিবার তাদের গৃহকর্মীদের চেয়ে পোষা কুকুরের জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করে । পরিবারটির বিরুদ্ধে মানবপাচার এবং কর্মীদের শোষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের কারাদণ্ড হতে পারে।
আদালতে কৌঁসুলি ইভেস বারতোসা জানান, একজন গৃহকর্মীর তুলনায় তারা তাদের একটি পোষা কুকুরের জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করে। কৌঁসুলিরা দাবি করেন, একজন নারী গৃহকর্মীকে দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে মাত্র ৬ দশমিক ১৯ সুইস ফ্রাঁ দেওয়া হয়। তাদের সপ্তাহে সাত দিনই কাজ করতে বাধ্য করা হয়।
কৌঁসুলি আরও বলেন, গৃহকর্মীদের সঙ্গে চাকরির চুক্তিতে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বা সাপ্তাহিক ছুটির কোনো উল্লেখ নেই। এমনকি কর্মীদের পাসপোর্টও পরিবারটি নিজেদের জিম্মায় রাখে। তাদের বেতন ভারতে পরিশোধ করা হয়, যার ফলে খরচ করার মতো কোনো সুইস ফ্রাঁও তাদের হাতে থাকে না।
আদালতে কৌঁসুলি বলেন, “চাকরিদাতার অনুমতি ছাড়া গৃহকর্মীরা বাড়ির বাইরে যেতে পারেন না এবং এই পরিবারে তাদের কোনো স্বাধীনতা নেই।” কৌঁসুলিরা অজয় হিন্দুজা ও তার স্ত্রী নম্রতার কারাদণ্ড দাবি করেছেন। তারা আদালতে মামলার খরচ বাবদ ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ এবং কর্মীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩৫ লাখ ফ্রাঁ দাবি করেন।
তবে হিন্দুজা পরিবার সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের আইনজীবীরা বলেন, পরিবারের সদস্যরা গৃহকর্মীদের সঙ্গে মর্যাদার সঙ্গে আচরণ করেন। কৌঁসুলিরা গৃহকর্মীদের বেতন নিয়ে যা বলেছেন, তা ভুল। হিন্দুজা পরিবারের আইনজীবীরা পাল্টা দাবি করেন, কেবল বেতন দিয়ে সবকিছু বিচার করা ঠিক নয়। গৃহকর্মীদের খাবার এবং থাকার ব্যবস্থাও পরিবারটি করে থাকে।
গৃহকর্মীদের দিয়ে ১৮ ঘণ্টা কাজ করানোর অভিযোগও অতিরঞ্জিত বলে দাবি করেন হিন্দুজা পরিবারের কৌঁসুলিরা। “বাচ্চাদের সঙ্গে গৃহকর্মীরা যখন সিনেমা দেখতে বসেন, সেটাও কি কর্মঘণ্টার মধ্যে বিবেচিত হবে? আমরা তা মনে করি না,” বলেন তারা।