টানা সাড়ে মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। অবিরাম এই হামলায় ভূখণ্ডটিতে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩০ হাজারে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
অন্যদিকে, দুই বছর পেরিয়ে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ গড়িয়েছে তৃতীয় বছরে। দীর্ঘ এই সময়ে হামলা-পাল্টা হামলায় হাজারও মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তবে নতুন এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে নিহত নারী ও শিশুর সংখ্যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত নারী ও শিশুদের চেয়ে ৬ গুণ বেশি।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নিরলস আক্রমণের মধ্যে গাজায় নারী ও শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছয় গুণ ছাড়িয়ে গেছে। আর এটি এই অঞ্চলে মারাত্মক বর্বরতার বিষয়টিই সামনে আনছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ান-ইউক্রেনীয় যুদ্ধে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা এবং গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে নিহত নারী ও শিশুদের সংখ্যা সংকলন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
গাজা ভূখণ্ডের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ এবং আগ্রাসনের শুরু থেকে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে ইসরায়েল আকাশ, স্থল এবং সমুদ্র থেকে নিরলসভাবে বোমাবর্ষণ করে চলেছে। ফিলিস্তিনি সূত্রগুলোর মতে, অবিরাম এই হামলায় ইসরায়েল ৬৬ হাজার টনেরও বেশি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। অর্থাৎ গাজায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে ১৮৩ টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে ইসরায়েল।
এছাড়া হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং ভূখণ্ডটির ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সময়ে ইসরায়েলের হামলায় ২৯ হাজার ৪১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১২ হাজার ৬৬০ জন শিশু এবং ৮ হাজার ৫৭০ জন নারী রয়েছেন।
এছাড়া নৃশংস এই হামলায় আরও ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যেও ৭০ শতাংশেরও বেশি নারী ও শিশু।
যদিও ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও চাপা পড়ে থাকা হাজার হাজার লোকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া হাসপাতাল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো স্থাপনায় হামলা চালিয়ে বেসামরিক অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে। মূলত আগ্রাসনের জেরে বাস্তুচ্যুত হওয়া ক্ষতিগ্রস্তরা এই ধরনের স্থাপনাতেই আশ্রয় নিয়ে থাকে।