২০২১ সালে কৃষকরা পুলিশ ও প্রশাসনের যাবতীয় অবরোধ সরিয়ে দিয়ে দিল্লি সীমান্তে গিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁদের সেই প্রতিবাদ এক বছর স্থায়ী হয়েছিল।
এবার ২০০টি কৃষক সংগঠন দিল্লি চলোর ডাক দিয়েছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে তাঁদের সেই যাত্রা শুরু হওয়ার কথা মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)।
কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সোমবার আলোচনায় বসছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই আলোচনা ভেস্তে গেলে দিল্লি অভিযান করার ব্যাপারে কৃষক সংগঠনগুলো বদ্ধপরিকর।
আর তাঁদের থামানোর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে হরিয়ানা ও কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লির সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজিয়াবাদ সীমানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাস্তায় বড় বড় পাথর ও সিমেন্টের স্ল্যাব ফেলা হয়েছে।
তার সামনে সিমেন্ট দিয়ে মোটা মোটা লোহার পেরেক বসানো হয়েছে। লাগানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়াও।
এ ছাড়া দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যাবতীয় প্রতিবাদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দিল্লিতে কোনো ট্রাক্টর ঢুকতে দেওয়া হবে না। ট্রাকে করে মানুষকেও ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এমনকি বিয়ে ও শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানের জন্যও অনুমতি নিতে হবে। সেখানেও কোনো লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে না। উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে আসা গাড়িগুলো খুব ভালো করে তল্লাশি করে দেখা হবে।
দিল্লিতে প্রচুর লোহার ব্যারিকেডও লাগানো হয়েছে। প্রচুর জলকামান রাখা হয়েছে। কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে কোনোভাবে দিল্লিতে ঢুকতে না পারেন, তার জন্য পুলিশ একেবারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে।
অন্যদিকে হরিয়ানায় সব পেট্রল পাম্পকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, ট্রাক্টরে ১০ লিটারের বেশি ডিজেল দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি হরিয়ানায় দুটি স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী জেল হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে কৃষকদের সেখানে আটক করে রাখা হবে। পাঞ্জাব থেকে দিল্লি পর্যন্ত প্রচুর জায়গায় রাস্তা আটকে দেওয়া হচ্ছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মান বলেছেন, পাকিস্তানের সীমান্তেও এতটা কড়াকড়ি থাকে না, যতটা কৃষকদের আটকাতে করা হয়েছে।
কেন এই ব্যবস্থা?
সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদিকে একমাত্র কৃষকদের আন্দোলনের সামনে নতি স্বীকার করতে হয়েছে। চাপের মুখে পড়ে তাঁকে সংসদে পাশ করা তিনটি কৃষি আইনকে বাতিল করতে হয়েছিল। দিল্লির সীমানায় যাবতীয় চাপ অগ্রাহ্য করে এক বছর ধরে আন্দোলন করেছিলেন কৃষকরা। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে কৃষকরা যাতে দিল্লিতে ওই ধরনের আন্দোলন আবার না করতে পারেন, তার জন্য মোদি সরকার এই ব্যবস্থা নিয়েছে।’