English

21 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

করোনা: টিকা পাচ্ছে ইসরাইল, অপেক্ষায় ফিলিস্তিন

- Advertisements -

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের প্রধানের সাথে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট বেনজামিন নেতানিয়াহু ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের পর আগামী সপ্তাহ থেকে বড় আকারে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে থাকা লাখো ফিলিস্তিনি নাগরিকরা রয়েছে দীর্ঘ অপেক্ষায়।

মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে ফিলিস্তিনি শহরে ও গ্রামে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ভীতি ক্রমস বাড়তে থাকলেও দ্রুতই ইসরাইলিরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে। অর্থনীতিও আবার পুনরুজ্জীবিত হবে। সম্প্রতি ফাইজারের সাথে চুক্তির ফলে ইসরাইল প্রায় ৮০ লাখ টিকা পাবে, যা তাদের প্রায় ৯০ লাখ অধিবাসীর অর্ধেক নাগরিকের জন্য যথেষ্ট। আক্রান্ত প্রতিজনকে টিকার ২টি করে ডোজ দিতে হবে।
ফাইজার টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষিত রাখার জন্য জার্মানির বায়োএনটেকের তৈরী ফ্রিজিং সুবিধা রয়েছে ইসরাইলের টিকা প্রদানের মোবাইল টিমের কাছে। আগামী সপ্তাহে দ্রুত সময়ের মধ্যে দিনে ৬০ হাজার ভ্যাকসিন ডোজ প্রদানের পরিকল্পনায় কাজ করছে তারা।
অন্যদিকে এ মাসের শুরুতে ইসরাইল মার্ডানার ৬০ লাখ টিকা ক্রয়ের জন্য আলাদা একটি চুক্তি করেছে। যা আরো ৩০ লাখ ইসরাইলির জন্য যথেষ্ট।
পশ্চিম তীরের ভিতরের অংশে অবৈধভাবে বসবাস করা ইহুদী বসতীতে ইসরাইলি নাগরিকদের মধ্যে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এ অঞ্চলের ২৫ লাখ ফিলিস্তিনিদের বঞ্চিত করা হবে। তাদেরকে নব্বয়ের শতকে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী টাকার ফাঁদে আটকে পড়া পশ্চিম তীর কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হবে।
১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময়ে গাজা এবং পূর্ব জেরুসালেমকে খন্ডিত করে পশ্চিম তীরকে অবরুদ্ধ করে রাখে ইসরাইল। যা ফিলিস্তিনি ভূখন্ডের ভবিষ্যত রাজ্য হিসেবে দাবি করা হয়।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ মানবিক উদ্যোগ কোভেক্সের সাথে আলোচনার মাধ্যমে টিকা প্রাপ্তির আশা করছে। সংস্থাটি করোনায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র দেশগুলোর ২০ শতাংশ নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে টিকা প্রদান করার পরিকল্পনা করছে।
তবে সংস্থাটি মাত্র ২০০ কোটি টিকা ক্রয়ের চুক্তি করেছে, যা সামনের বছর পওয়া যাবে। আর্থিক সংকট থাকায় এখনো কোন নির্দিষ্ট চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি সংস্থাটি। সামনের বছরে সম্ভাব্য উৎপাদিত ১২‘শ কোটি টিকার মধ্যে ৯০০ কোটি টিকা ক্রয়ের বুকিং দিয়ে রেখেছে ধনী দেশগুলো।
অন্যদিকে সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হল, ফিলিস্তিনে ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ করার মত মাত্র একটি ফ্রিজ রয়েছে। রাশিয়া, মডার্নার সাথে আলোচনা করলেও টিকার বিষয়ে এখনো কোভেক্সের বাইরে কারো সাথে কোন চুক্তি করতে পারেনি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আপাতত কোভেক্স থেকে প্রাপ্ত ২০ শতাংশ নাগরিকের নাগরিকের বরাদ্দ করা টিকা থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করবে। বাকিদেরকে দেশটির টিকার ক্রয় ক্ষমতা ও বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আলোচনার মাধ্যমে টিকা প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে টিকা প্রদান করা হবে।
ফিলিস্তিন-ইসরাইল উভয়েই করোনা নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে যাচ্ছে। যা একে অন্যকে সাহস যোগাচ্ছে, কারণ ইসরাইলে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে। ইসরাইলে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৬ হাজার মানুষের করোনা হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩ হাজার মানুষের। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে এ পর্যন্ত ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮‘শর বেশি মানুষের।
তবে গাজার অবস্থা আরো সূচনীয়। ২০০৭ সালে হামাস নির্বাচিত হওয়া পর থেকে ইসরাইল ও মিশরের অবরোধে থাকা এ অঞ্চলে ৩০ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ২২০ জনের। আন্তর্জাতিক কোন সহায়তা না পাওয়ায় তাদেরকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে। অর্থাৎ এ অংশে বড় আকারে টিকা প্রাপ্তির জন্য বেশ কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, ইসরাইলের স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইসরাইল প্রয়োজনের চেয়ে বেশি টিকা আনার চেষ্টা করছে এবং আমাদের দেখতে হবে ইসরাইলের চাহিদা মিটে কিনা। পরে আমাদের যদি বাড়তি সক্ষমতা থাকে, তবে অবশ্যই আমরা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করার বিষয়টি বিবেচনা করব।’
সূত্র : আলজাজিরা
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন