ভারতের কর্পোরেট দুনিয়ার আলোচিত নাম কনিকা তেকরিবল। মাত্র ২২ বছরে এভিয়েশনের জগতে পা রেখে সাফল্যের সাথে এগিয়ে চলেছেন। ৩২ বছর বয়সে এসে তিনি এখন ১০টি প্রাইভেট জেটের মালিক। কথাগুলো স্বপ্নের মতো শোনালেও এভিয়েশন দুনিয়ায় হাতে গোনা কয়েকজন নারীর মধ্যে তিনিই অন্যতম। কনিকা তেকরিবল ২০১২ সালে তার কোম্পানি ‘জেটসেটগো’র প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বিমানের একটি স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে চার্টার্ড প্লেন এবং হেলিকপ্টারের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।
জেটসেটগোর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় ক্লায়েন্টদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে উড়ানের সুবিধা দেওয়া হয়। প্রায় এক যুগ আগে মানুষের ব্যক্তিগত উড়ানকে সুগম, স্বচ্ছ, সাশ্রয়ী ও কার্যকর করার লক্ষ্য নিয়েই কনিকা জেটসেটগো’র যাত্রাটা শুরু করেন। তিনি জানিয়েছেন, জেটসেটগো শুরুর আগে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি নিয়ে নানা চিন্তা-ভাবনা করেন। কিন্তু যখনই তিনি এটি বাস্তবে রূপ দিতে যান, তখন তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। এতে চিকিৎসার নেওয়ার কারণে তিনি সেই পরিকল্পনায় এক বছর পিছিয়ে পড়েন। পরে সৌভাগ্যক্রমে একজন অগ্রগামী নারী হিসেবে তিনি ‘জেটসেটগো’ প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১২ সালে যাত্রা শুরু করা ‘জেটসেটগো’ ভারতের আভ্যন্তরীণ আকাশ পথের ইন্টার-সিটির যোগাযোগকে সহজ করার ক্ষেত্রে অগ্রগামী। এটি এখন বিমানে চলাচল সহজ করে মানুষের অর্থ সাশ্রয় ও সময় বাঁচানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। এটি চার্টার্ড বিমান ব্যবহারকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করেছে। যদিও কনিকা তেকরিবল এক সময় হতাশা নিমজ্জিত হয়ে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন।
জানা গেছে, যখন কনিকা দেখলেন এভিয়েশনের ব্যক্তিগত চার্টার্ডের বিমানগুলো ব্রোকার ও অপারেটরদের হাতে চলে গেছে। তখন প্রাইভেট জেটের জন্য যে কাউকে ব্রোকার অথবা প্রাইভেট অপারেটরদের উপর নির্ভর করতে হতো এবং সীমিত সেবা দিয়েই ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কমিশন নিতো। সেসময় গ্রহীতাদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব ও চার্টার্ড বিমানের সংকটের কারণে ক্লায়েন্টদের তুলনামূলক বেশি অর্থ গুণতে হতো- এরপরও অপারেটরদের সরবরাহ করা যেকোনো বিমানেই ফ্লাই করতে হতো। এসব পরিস্থিতি দেখে হতাশ হয়ে যান কনিকা। পরে চিন্তা-ভাবনা করে এক বছর আট মাস সময় নিয়ে তিনি জেটসেটগো কোম্পানির যাত্রা শুরু করেন।
কনিকা তেকরিবলের লক্ষ্য জেটসেটগো সাধ্যের সেরাটুকু দিয়ে যাবে ক্লায়েন্টদের। তার কোম্পানি ভারতীয়দের সময়ের মূল্যকে মাথায় রেখে নিরাপদে সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁঁছে দিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাবে। কনিকা বিমান ভ্রমণকে গণতন্ত্রীকরণ করতে চান ভারতে।
উল্লেখ্য, কনিকা দক্ষিণ ভারতের মাড়োয়ারি পরিবারের সন্তান। তিনি এমবিএ শেষ করেছেন। কনিকার বাবা একজন রিয়েল স্টেট ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ী। কনিকা দক্ষিণ ভারতে থাকা অবস্থায় স্কুলের গণ্ডি পার করেন। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান। পরে বন্ধু সুধীর পার্লাকে সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেখে নিজের কোম্পানি জেটসেটগো প্রতিষ্ঠা করেন।