গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে গেলে দেশটির অনেক নারীর জীবন রাতারাতি বদলে যায়। তেমনই একজন শবনম দাওরান।
শবনম টিভিতে সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছিলেন। আফগানিস্তানে ক্ষমতার এই রদবদল তাঁর জন্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি হিসেবে আসে।
প্রায় এক বছর ধরে শবনম যুক্তরাজ্যে শরণার্থী হিসেবে একটি নতুন জীবন গড়ার চেষ্টা করছেন। উপস্থাপক থেকে রাতারাতি তাঁর শরণার্থী হওয়ার গল্প তুলে ধরেছেন বিবিসির সোদাবা হায়দার।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ঠিক তার আগের রাতে শবনম দেশটির একটি টেলিভিশনে প্রাইমটাইমে সংবাদ উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
সেটা ছিল এমন এক সময়, যখন তালেবান আফগানিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দেশটির রাজধানী কাবুলের উপকণ্ঠে পৌঁছে গেছে।
২৪ বছর বয়সী শবনম ছিলেন একজন উঠতি তারকা। দেশটির সবশেষ পরিস্থিতি দর্শকদের জানাতে সেদিন তিনি ‘অন-এয়ারে’ গিয়েছিলেন।
তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে শবনম বলেন, ‘আমি এতটাই আবেগপ্রবণ ছিলাম যে প্রধান সংবাদ পর্যন্ত পড়তে পারছিলাম না। যাঁরা (দর্শক) বাড়িতে বসে আমাকে দেখেছেন, তাঁরা বলতে পারবেন, আমি কী অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম।’
পরের দিন সকালে শবনম যখন ঘুম থেকে ওঠেন, তখন তালেবানের হাতে কাবুলের পতন ঘটে গেছে।
শবনমের টিভি স্টেশনে হানা দেয় তালেবান। একজন তালেবান সদস্য তাঁর পেছনে সংগঠনের পতাকা রেখে টিভি স্টেশনের স্টুডিওর চেয়ারে বসেন। এ চেয়ারেই আগের রাতে বসেছিলেন শবনম।—এই যে বদল, তা আফগানিস্তানে একটি যুগের সমাপ্তির বার্তা দেয়।
ক্ষমতায় আসার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকের বলেন, দেশটিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করতে পারবেন।
পরের দিন কিছুটা শঙ্কা ও উত্তেজনা নিয়ে শবনম তাঁর কাজের পোশাক পরে কর্মক্ষেত্রে যান। কিন্তু তিনি টিভি স্টেশনে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তালেবান যোদ্ধাদের সামনে পড়েন। তাঁরা ভবনটি পাহারা দিচ্ছিলেন। তাঁরা শুধু পুরুষ কর্মীদের ভবনে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছিলেন।