৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর অনেক ইসরায়েলিকে নিরাপত্তাহীনতার বোধ আঁকড়ে ধরেছে। দেশটিতে বন্দুকের অনুমতির জন্য আবেদনকারী নারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে নারীবাদী দলগুলো এ পরিস্থিতির সমালোচনা করছে।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, হামলার পর থেকে বন্দুকের অনুমতির জন্য নারীদের কাছ থেকে ৪২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে ১৮ হাজারটি অনুমোদিত হয়েছে।
এ সংখ্যা যুদ্ধের আগে নারীদের হাতে থাকা লাইসেন্সের সংখ্যার চেয়ে তিন গুণ বেশি।
ইসরায়েলের ডানপন্থী সরকার ও উগ্র ডানপন্থী নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভিরের অধীনে দেশটির বন্দুক আইন শিথিল করার মাধ্যমে এই উত্থান সম্ভব হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৫ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নারী এখন ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক। এ ছাড়া ১০ হাজার নারী বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণে নিবন্ধিত রয়েছে।
ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ৭ অক্টোবরের হামলার ফলে ইসরায়েলে এক হাজার ১৯৪ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে গাজায় প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। দুই পক্ষের নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক।
যদিও হামাসের আক্রমণের পর ইসরায়েলে বন্দুক কেনার হিড়িক পড়েছে। তবে বেন গভির ২০২২ সালের শেষের দিকে নিরাপত্তামন্ত্রী হওয়ার সময় আগ্নেয়াস্ত্র আইন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
তিনি অস্ত্রধারী বেসামরিক নাগরিকদের সংখ্যা বাড়ানো এবং ‘আত্মরক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি’র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার অধীনে বন্দুকের লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াটির গতি বেড়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, হামাসের আক্রমণের পরপরই কর্তৃপক্ষ প্রায় প্রতিদিন শত শত পারমিট ইস্যু করছে।
ইসরায়েলে বন্দুকের মালিকানার যোগ্যতার মানদণ্ডের মধ্যে রয়েছে ১৮ বছরের বেশি বয়সের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া, হিব্রু ভাষার ওপর সাধারণ দখল এবং চিকিৎসা ছাড়পত্র। তবে প্রয়োজনীয়তার সম্পূর্ণ তালিকা মেনে ইহুদি ছাড়া অন্যদের পারমিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
এদিকে সাধারণ ইসরায়েলিদের হাতে মারাত্মক অস্ত্র দেওয়ার জন্য সমালোচনারও সৃষ্টি হয়েছে। নারীবাদী কর্মীদের প্রতিষ্ঠিত দ্য গান ফ্রি কিচেন টেবিল কোয়ালিশন বেসামরিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার নিন্দা করেছে। ১৮টি সংগঠনের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘বেসামরিক জায়গায় অস্ত্রের বৃদ্ধি নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হত্যা বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে। রাষ্ট্রের বোঝা উচিত, ব্যক্তি পর্যায়ে নিরাপত্তা দেওয়া তার দায়িত্ব।’