পাকিস্তানের লাহোরে পুলিশি অভিযানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক কর্মী নিহত হয়েছেন। বুধবার (৮ মার্চ) পিটিআইয়ের বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে এ অভিযান চালায় পাঞ্জাব পুলিশ।
নিহত পিটিআই কর্মীর নাম আলি বিলাল। তিনি লাহোরের জাহাঙ্গির টাওনের অধিবাসী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, পুলিশের প্রচণ্ড লাঠিচার্জে আহত হন যুবক আলি বিলাল। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়।
পাকিস্তান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের রাজনৈতি অস্থিতিরতা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যেই ইমরান খানকের গ্রেফতার চেষ্টা করায় চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন পিটিআই কর্মীরা। এরই ফলস্বরূপ বুধবার প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই লাহোরে সমাবেশ করে পিটিআই। এতে হাজার হাজার পিটিআই নেতা-কর্মী অংশ নেন।
পিটিআই নেতা-কর্মীদের দাবি, বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হলেও, হঠাৎ করেই সাড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ ও পিটিআই কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এরপর লাহোরের মল রোড ও ক্যানাল রোডে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। পুলিশ লাঠিচার্জ, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে সমাবেশ পণ্ড করার চেষ্টা করে। জবাবে ইট-পাথর ছোড়ে ইমরান খানের সমর্থকরা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, এদিন পুলিশের অভিযানে অনেকেই আহত হয়েছেন। তাছাড়া আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে। পিটিআই নেতা-কর্মীরা বলছেন, ইমরান খানকে কোনোভাবেই গ্রেফতার করতে দেওয়া হবে না। তাকে গ্রেফতার করতে হলে আগে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করতে হবে।
এদিকে, আলি বিলালের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইমরান খান। এ সংক্রান্ত এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, আলি বিলাল পিটিআইয়ের নিরস্ত্র, নিবেদিতপ্রাণ এক কর্মী ছিলেন। পাঞ্জাব পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দিতে আসা নিরস্ত্র পিটিআই কর্মীদের ওপর পুলিশের এ বর্বরতা অন্তত লজ্জাজনক।
তোশাখানার মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন–অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। রোববার (৫ মার্চ) আদালতের সমন ছাড়াই ইসলামাবাদ পুলিশ ইমরান খানকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে তার লাহোরের বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে সেদিন তাকে ওই বাড়িতে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এরপর থেকেই ইমরান খানের বাড়ির সামনে লাগাতার অবস্থান করছেন পিটিআই নেতা-কর্মীরা। গ্রেফতার এড়িয়ে সেদিন বিকেলেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমরান খান। বলেন, গ্রেফতারি এড়াতে আমি দেশ ছেড়ে পালাইনি। আমি কোনোদিন কারও সামনে মাথা নত করিনি, ভবিষ্যতেও করবো না। আর দেশ ছেড়ে পালানোর বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই।