ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আমির খান নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে টানা ১৪ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছে দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
অভিযানে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে নগদ ১৭ কোটি ৩২ লাখ রুপি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া কলকাতার নিউটাউনে ওই ব্যবসায়ীর অফিস থেকে আরও কয়েক কোটি রুপি উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় কলকাতার ছয়টি জায়গায় তল্লাশি শুরু করে ইডি। গার্ডেনরিচে আমিরের বাড়িতে এ তল্লাশি শেষ হয় রাত সাড়ে ১০টায়। টানা ১৪ ঘণ্টার অভিযানে আমির খানের বাড়ি ও অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।
ইডির বরাতে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তদন্তে নেমে কলকাতার গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলি, পার্ক স্ট্রিট, মোমিনপুরের বন্দর এলাকা, নিউটাউনসহ ছয়টি জায়গায় অভিযান শুরু করে ইডি।
কেন্দ্রীয় সংস্থাটির কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। অভিযানের সময় সিআরপিএফ জওয়ানদের আমিরের বাড়ির বাইরে মোতায়েন রাখা হয়। ভেতরে চলে চিরুনি তল্লাশি।
গার্ডেনরিচে ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ রুপির সন্ধান মেলে। পরে ব্যাংক থেকে মেশিন এনে তা গোনার কাজ শুরু হয়। রাত ১০টার কিছু সময় পর রুপি গোনার কাজ শেষ হয়। ওই রুপি ট্রাঙ্কভর্তি করে গাড়িতে তুলে ইডি হেফাজতে নেওয়া হয়।
অভিযান শেষে কলকাতার গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি থেকে ট্রাঙ্কের পর ট্রাঙ্কভর্তি রুপি বের করেন ইডি কর্মকর্তারা। তারা গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় ইডি কার্যালয়ে।
বিপুল পরিমাণ রুপি উদ্ধারের পর আমিরের বাড়ির লোকজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে বিপুলি পরিমাণ স্বর্ণ ও অন্যান্য সম্পতির খোঁজ মেলে। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে কীভাবে এলো, তা খতিয়ে দেখবে ইডি।
ইডির কর্মকর্তারা জানান, সাদামাটা দোতলা বাড়িতে তল্লাশির শুরুর দিকে কিছুই পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে খাটের তলায় রাখ প্লাস্টিকের প্যাকেটে বান্ডিল করা রুপির সন্ধান মেলে। এরপর সেখানে থরে থরে রুপির বান্ডিল সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়।
এদিকে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইডি জানিয়েছে, মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে বহু গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে আমির ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী নিসার আহমেদ খানের ছেলে আমির খানের বিরুদ্ধে পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি প্রতারণার মামলা করা হয়।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪৬৮, ৪৭১ এবং ৩৪ ধারায় প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গসহ একাধিক অভিযোগ করা হয় মামলায়। পুরোনো সেই মামলার তদন্তে নেমে শনিবার সকালে আমিরের বাড়ি ও অফিসে অভিযান শুরু করে ইডি কর্মকর্তারা।