সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, নোভেল করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করেছে। সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল শিল্প এবং বিস্তৃত সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল কোভিড-১৯ মহামারি দ্বারা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সংস্কৃতি খাত মারাত্মক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এখন আমাদের সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল ক্ষেত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সবার একসাথে কাজ করা দরকার। সংস্কৃতি খাতে টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল (২১ মে) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে অনুষ্ঠিত “PGA (President of the General Assembly-United Nations) High-Level Event on ‘Culture and Sustainable Development’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের প্যানেল-২ এর আলোচনা সভায় ভিডিও বার্তায় সংযুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
নিউইয়র্ক সময় ২১ মে বিকাল ৩:২০ টা হতে বিকাল ৪:২০টা (বাংলাদেশ সময় ২২মে রাত ১:২০টা হতে রাত ২:২০টা) পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এক ঘন্টা মেয়াদী প্যানেল-২ এর আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল: “The Status of Artists, Cultural Professionals and Organisations: Equitable Digital Transformations to Support COVID-19 Recovery” (শিল্পী, সাংস্কৃতিক পেশাজীবী ও সংগঠনসমূহের অবস্থা: কোভিড-১৯ মহামারি হতে পুনরুদ্ধারের জন্য উপযুক্ত ডিজিটাল রূপান্তর)।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত সকল খাতকে চাঙ্গা ও পুনরুজ্জীবিতকরণ এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে গতিশীল করার লক্ষ্যে গত বছর তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ১২.১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সময়োপযোগী এক সেট (১৯টি) আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন যার মধ্যে সাংস্কৃতিক খাতও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কে এম খালিদ বর্তমান মহামারি এবং সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল শিল্পের টেকসইকরণের দিকসমূহ বিবেচনা করে এ ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলির বর্ণনা করেন। তিনি যেসব অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলির সুপারিশ করেন তা হলো- প্রথমত: সকল স্তরে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবসমূহ বিবেচনা করে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন; দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল অবকাঠামোয় বিনিয়োগের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল ক্ষেত্রে অগ্রগতি বৃদ্ধি করা; তৃতীয়ত, কপিরাইট নিশ্চিতকরণ এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কপিরাইট স্বত্বাধিকারী ও শিল্পীদের কমিশন নিশ্চিতকরণ;
চতুর্থত, পুস্তক প্রকাশকসহ শিল্পী, সাংস্কৃতিক পেশাজীবী ও সংগঠনসমূহকে উৎসাহ দেয়ার জন্য প্রণোদনা বা আর্থিক সহায়তা প্রদান।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, উদীয়মান প্রযুক্তির সাথে বড় আকারের ডিজিটালাইজেশন বিশেষ করে ভার্চুয়াল টুলসমূহ নতুন ধরনের সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা এবং বাজার সম্ভাবনাসহ নতুন ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করতে পারে। তিনি বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে সময়োপযোগী এ ভার্চুয়াল ইভেন্ট আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ এবং ইউনেস্কোকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সময় ২১ মে সকাল ১০টা হতে সন্ধ্যা ৬টা (বাংলাদেশ সময় ২১ মে রাত ৮টা হতে ২২ মে রাত ৪টা) পর্যন্ত অনুষ্ঠিত “PGA High-Level Event on ‘Culture and Sustainable Development’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি UNESCO ও UNCTAD এর সহযোগিতায় আয়োজন করে The office of the President of the General Assembly of United Nations (PGA) এবং এটি কয়েকটি অংশে বিভক্ত ছিল, সেগুলো হল: উদ্বোধনী, ৩টি প্যানেল আলোচনা, প্লেনারি ও সমাপনী সেগমেন্ট। ২০১৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে ২০২১ সালকে ‘International Year of Creative Economy for Sustainable Development’ ঘোষণা করা হয় এবং সে প্রেক্ষিতে ‘সংস্কৃতি ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক এ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।