সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের রয়েছে হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী, সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি। ঢাকার লালবাগ কেল্লা, নওগাঁর পাহাড়পুর, বগুড়ার মহাস্থানগড়, কুমিল্লার ময়নামতি, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদসহ এ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ও নিদর্শন। এসব ঐতিহ্যবাহী, নান্দনিক ও বৈচিত্র্যময় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা তথা প্রত্নস্থলসমূহের যুগোপযোগী ও আধুনিক সংস্কার, সংরক্ষণ ও ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক ডকুমেন্টেশনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিকট হতে আর্থিক, কারিগরী ও বিশেষজ্ঞ সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করছি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে রাজধানীর লালবাগ কেল্লায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অর্থায়নে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘লালবাগ কেল্লার ঐতিহাসিক মোঘল হাম্মামখানার সংস্কার, সংরক্ষণ ও ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক ডকুমেন্টেশন’ (Restoring, Retrofitting and 3D Architectural Documentation of Historical Mughal Hammam of Lalbag Fort) শীর্ষক প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, হাম্মাম খানা মোঘল সুবেদারদের দরবার হল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে হাম্মামখানা ভবনটি লালবাগ দুর্গ জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হল গবেষণা ও ডকুমেন্টেশনের মাধ্যমে হাম্মামখানা ভবনের পরিপূর্ণ সংস্থার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং ইতোপূর্বে সনাক্তকৃত ক্ষতি প্রশমনের নিমিত্ত জরুরি কিছু সংস্কার-সংরক্ষণ কাজ সম্পাদন। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে যে কাজগুলো সম্পাদন করা হবে তা হলো- হেরিটেজ ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট, ত্রিমাত্রিক স্থাপত্যিক ডকুমেন্টেশন, হাম্মামখানা ভবনের সংস্কার-সংরক্ষণ এবং বৈদ্যুতিক কাজ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ বদরুল আরেফীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার (Earl R. Miller)।
প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে সংক্ষেপে উপস্থাপনা করেন বিশিষ্ট হেরিটেজ স্পেশালিস্ট ও সংরক্ষণ স্থপতি ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ। স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আতাউর রহমান।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘US Ambassador’s Fund for Cultural Preservation- Small Grants Competition (Fiscal Year 2020)’ -এ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক প্রেরিত উপরোক্ত প্রকল্প প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়। প্রকল্পটির জন্য অনুদানকৃত মোট অর্থ ১,৮৫,৯৩৩ মার্কিন ডলার এবং মেয়াদ ২০২০ সালের অক্টোবর হতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।