জন্মগত ছানি শনাক্তকরণ : এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- শিশু কোনো কিছুর দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করে কিনা, আলোর দিকে তাকায় কিনা, খেলনা ইত্যাদি ধরার চেষ্টা করে কিনা, চোখে ট্যারাভাব আছে কিনা, নিসটেগমাস বা চোখে কাঁপুনি আছে কিনা ইত্যাদি। ট্যারাভাব ও নিসটেগমাস বা চোখে কাঁপুনি থাকলে এটি খারাপ লক্ষণ।
ছানির চিকিৎসা : এ রোগের একমাত্র চিকিৎসা হলো অস্ত্রোপচার। প্রাথমিক অবস্থায় লেন্স অপসারণ ও পরবর্তী সময়ে কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করে চোখের আলো কিছুটা ফিরিয়ে আনা যায়। অনেক সময় প্রথমবারেই কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করা যায়। এটি নির্ভর করে অস্ত্রোপচারের সময় শিশুর বয়স ও এক চোখে না দুই চোখে ছানি, তার ওপর। কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করলে অথবা না করলেও চশমার প্রয়োজন হবে।
কনজেনিটাল ক্যাটারাক্ট ও অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে সারা জীবন ধরে ফলোআপ প্রয়োজন। কারণ জন্মগত ছানির ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘমেয়াদে বিষয়টি বয়স্কদের মতো জটিলতাবিহীন নয়। দীর্ঘমেয়াদে জটিলতার মধ্যে গ্লুকোমা ও রেটিনাল ডিটাচমেন্ট অন্যতম।
জন্মগত ছানি মানে সারা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দৃষ্টি। তাই ছানি হলে যেমন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, তেমনি ছানি যাতে না হয়, অর্থাৎ জন্মগত ছানি প্রতিরোধও তেমনি জরুরি।
কোন শিশু ছানি নিয়ে জন্মাবে, আগে থেকে সেটি জানা না গেলেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে অনেক সময় এটি দূর করা সম্ভব। সেটি হলো গর্ভকালীন মায়ের স্বাস্থ্য পরিচর্যা। বিশেষ করে ভাইরাসের সংক্রমণ, মেটাবলিক ডিজঅর্ডার ইত্যাদি অ্যান্টিনেটাল চেকআপে থাকলে আগেই দৃষ্টিগোচর হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।
লেখক: চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন এবং প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল
চেম্বার: আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার, ৩৮/৩-৪ রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা