ডায়রিয়া রোগী কমার কোনো আভাস নেই। গতকাল শুক্রবার ঢাকার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ৫৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ জন ভর্তি হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাহারুল আলম বলেন, ‘ঢাকার অন্যান্য হাসপাতালেও ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।কিন্তু বেশি চাপ আমাদের হাসপাতালে। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ ১৮ ঘণ্টায় আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে এক হাজার ৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক হাজার ৩৮২ জন, বুধবার এক হাজার ৩৭০, মঙ্গলবার এক হাজার ৩৭৯, সোমবার এক হাজার ৩৮৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়রিয়ার সঙ্গে কলেরায় আক্রান্ত রোগীও ভর্তি হচ্ছে।
ডা. বাহারুল আলম বলেন, গত ৮ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত যেসব রোগী ভর্তি হয়েছিল তাদের মধ্যে ২৩ শতাংশ কলেরায় আক্রান্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘গরমের সময় প্রতিবছরই আমাদের এখানে ভর্তি রোগীদের ২০ শতাংশের মতো কলেরায় আক্রান্ত অবস্থায় ভর্তি হয়। তবে এতে উদ্বেগের কিছু নেই। কলেরার চিকিৎসা আছে এবং এ রোগ আগের মতো জীবনঘাতী নয়। দেশে কলেরার ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও তার সফল প্রয়োগ হয়েছে। ’
এদিকে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, ডায়রিয়া রোধে কী করণীয়, তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনও জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু নিম্ন আয়ের যেসব মানুষ এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তাদের এই প্রচারণা তেমন কোনো কাজে লাগছে না। পানি ফুটিয়ে পান করার মতো সুযোগ ও সামর্থ্য তাদের নেই।
২০০৭ সালে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিলে তখন নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিতরণ করা হয়েছিল পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। সেনাবাহিনী এ কাজে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে। এবারও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সে ধরনের উদ্যোগ নিলে ডায়রিয়া রোগী কমে আসতে পারে।