মোবাইল ফোনে স্ক্রলিং এখন হাটে ঘাটে মাঠের সাধারণ চিত্র। ছোট থেকে বয়স্ক সবাই আক্রান্ত এই নেশায়। এনিয়ে যখন গোচা পৃথিবীতে চলছে নানা ধরনের গবেষণা তখনই জানা গেলো এই আসক্তি ডেকে আনছে অনেক রোগ্য ব্যাধি। সবশেষ সংযুক্তি ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’।
ভার্টিগো রোগ বলতে আমরা বিশেষ ধরনের মাথা ঘোরাকে বুঝিয়ে থাকি। দাঁড়িয়ে কাজ করতে গিয়ে হঠাৎই মাথা ঘুরে যাওয়া কিংবা শুয়ে থাকার সময় আচমকাই ঘরটা ঘুরছে।
এসবই হতে পারে ভার্টিগোর উপসর্গ। এক্ষেত্রে শারীরিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে সেখানে সমস্যা হলেই ভার্টিগো হতে পারে। কানের মধ্যে সমস্যা হলেও অনেকের ভার্টিগো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হালে মোবাইল ফোন অনেকের কাছে নেশার পাশাপাশি পেশাও হয়ে উঠেছে। আর নেশা পেশার কারণেই মস্তিস্কের ভেস্টিবুলার সিস্টেমের গোলমাল হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ব্যবহারকারী আক্রান্ত হচ্ছেন ভার্টিগো রোগে। এ ধরনের রোগটি চিকিৎসকরা বলছেন, ডিজিটাল ভার্টিগো।
২৯ বছর বয়সি ফেনেলা ফক্স থাকতেন পতুর্গালে। দিনের বেশিরভাগ সময় তিনি কাটিয়ে থাকেন ইনস্টাগ্রাম নিয়ে। সেখানে তার অনুসারী প্রায় দু’লাখ। দুবছর আগে তার মাথাব্যথা ও ঘাড় ব্যথা সমস্যা শুরু হয়। ধীরে ধীরে যন্ত্রণা আরও বাড়তে থাকে। শুরু হয় মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব।
অসুস্থতার কারণে তিনি ইংল্যান্ডে বাবা-মায়ের কাছে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিমানবন্দরে তাঁর শরীর আরও খারাপ হয়ে যায়, তাঁকে উইলচেয়ারের সাহায্য নিতে হয়। তার পর থেকেই তিনি শয্যাশায়ী, উইলচেয়ার ছাড়া হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায় তাঁর।
পরে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হলে তারা জানান, ফনেলার মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তির কারণেই ভার্টিগোতে আক্রান্ত তিনি। ফনেলা বলেন, ইনস্টাগ্রাম নিয়ে পড়ে থাকার কারণে তার এমন দশা হতে সেটা তিনি একদম ভাবতেই পারেননি। তাঁকে সুস্থ করতে এখন চলছে বিশেষ চিকিৎসা।
ফেনেলার চিকিৎসা শুরু হবার পর সবার আগে তাঁকে ফোন থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। বিশেষ চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হতে শুরু করেন। তবে আগের মতো ফোন ব্যবহার করা তাঁর বারণ। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ফোন ব্যবহার করলেই তাঁর ভার্টিগোর সমস্যা আবার ফিরে আসবে।
অথচ এই সামাজিক মাধ্যম থেকেই তিনি উপার্জন করতেন। তাই, এক দম ফোন থেকে দূরে থাকাও সম্ভব নয়। তবে শরীরের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তাঁকে ফোনের ব্যবহার কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশেষ কায়দা বসে ফনেলা ফক্সকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হয়।