বাজারে বিক্রি করা গরু ও ছাগলের মাংসে যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া গেছে। শতকরা তিন ভাগ গরু ও ১৫ ভাগ ছাগলের মাংসে এ জীবাণু পাওয়া গেছে। তবে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন গবেষক।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খানের গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৩ সালে এ গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়। বায়ো মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের (বিআরসি) সহায়তায় গবেষণাটি ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পরিচালিত হয়। এরপর কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অধীনেও গবেষণাটি পরিচালিত হয়। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জীবিত গরুর আড়াই হাজার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। একই সঙ্গে সংরক্ষিত উৎস থেকে পাঁচ শতাধিক নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়।
প্রাপ্ত নমুনায় গরু থেকে শতকরা তিন ভাগ ও ছাগল থেকে শতকরা ১৫ ভাগ যক্ষ্মার জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। গরুর মাংসে যক্ষ্মার জীবাণুটি হচ্ছে মাইকোব্যাক্টেরিয়াম বোভিস। এছাড়া ছাগলের মাংসে মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস, সিউডো টিউবারকুলোসিসসহ কয়েক ধরনের যক্ষ্মার জীবাণু শনাক্ত করা হয়।
গবেষণাপত্রটি জার্নাল অব দ্য বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ জার্নাল অব প্রগ্রেসিভ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আইকিউএসআর জার্নাল অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স ও ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ভেটেরিনারি প্যাথলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গবেষক অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান বলেন, গরু ও ছাগলের মাংসে উপস্থিত যক্ষ্মার জীবাণু মানুষের শরীরে আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জীবাণু মানুষের শরীরে ঢুকে প্রথমে লসিকা গ্রন্থিতে সংক্রমণ করে।’
এ জীবাণুতে চিড়িয়াখানা, কসাইখানা ও ডেইরি ফার্মে কর্মরত ব্যক্তিদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি বলে জানান এ গবেষক। তবে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
মাংস সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রান্নার সময় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন গবেষক আবু হাদী নূর আলী খান।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে যারা সংশিষ্ট তাদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা মাংসে তেমন কোনো ঝুঁকি থাকে না। তবে পশু জবাইয়ের আগে পশুচিকিৎসকের কাছে ছাড়পত্র নিলে তা সবচেয়ে ভালো হবে।’